চির বিদায় নিয়ে না ফেরার ভুবনে চলে গেলেন এক সময়ের ঢাকার ফুটবল ও ক্রিকেট আসরের কৃতি খেলোয়াড় কালা
অনেকটা আকস্মিক ভাবেই হুট করে গেলোকাল ৫ ফেব্রুয়ারী সকালে হার্ট এ্যাটাকে চির বিদায় নিয়ে না ফেরার ভুবনে চলে গেলেন এক সময়ের ঢাকার ফুটবল ও ক্রিকেট আসরের কৃতি খেলোয়াড় প্রিয় কালা ভাই(ইন্নালিল্লাহে ….. রাজিউন)। খবরটা শুনে বিশ্বাসই হচ্ছিলোনা প্রিয় মুখ সদা হাসি খুশি প্রানোচ্ছল কালা ভাই আর নেই। এইত এক সপ্তাহও হয়নি টানা এক ডজনেরও বেশীবার ফোন করেছিলেন কালা ভাই। খুব বিনীত ভাবেই অনুরোধ রাখছিলেন তার ছেলেটাকে একটা কাজে হেলপ করার জন্য। আর বার বার বলছিলেন অনেকদিন দেখা নেই আসুন সময় করে ধানমন্ডি ক্রিকেট ইনডোরে দেখা করি । ওথানেই যে ছিলো তার কর্মস্থল। ধানমন্ডির ইনডোর ক্রিকেটের ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন কালা । বলেছিলাম কালা ভাই বাসা বদল নিয়ে বেশ ব্যাস্ত আছি ফ্রি হয়েই দেখা করছি। আর হলোনা। এভাবে কালা ভাই বিদায় নিয়ে চলে যাবেন ভাবতেই পারছিনা। মৃত্যুটা চিরন্তন সত্য। তবে প্রিয় মুখ গুলোর হুট করে আকস্মিক ভাবে চির বিদায় নিয়ে না ফেরার ভুবনে চলে যাওয়াটা সত্যি বেদনাদায়ক। কালা ভাই আজ আমাদের মাঝে নেই তবে তার খেলা আর নানা মুহূর্তের স্মৃতি গুলো যে অনেকের মনেই জাগ্রত থাকবে একথা বলতেই হয়। দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে বেহেস্ত নসিব করেন। আমিন।
এক সময়ের ঢাকা ফুটবলের পরিচিত মুখ ছিলেন আক্রমন ভাগের কৃতি ফুটবলার কালা। বলতে হয় সে সময়টায় ’ছোট কালা’ হিসাবেই ছিলেন অধিক পরিচিত। ’৭৬ এর লীগ চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান এবং পরবর্তী নানা সময়ে কালা দিলখুশা ও রহমতগঞ্জের হয়ে খেলেছেন বেশ কবছর সুনামের সাথেই। ঢাকা মোহামেডানের হয়ে কালা লীগ-আগাখাঁন গোল্ড কাপ ও সফররত বিদেশী দলের বিরুদ্ধেও সাদাকালো জার্সী গায়ে জড়িয়ে খেলেছিলেন নিজ সুনামের সাথে।
ফুটবলের পাশাপাশি ওই সময় ঢাকার ক্রিকেট লীগেও নিয়মিত খেলেছেন কালা এবং আক্রমনাত্মক ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে নামও কুড়িয়েছিলেন বেশ। ’৭৭ সালে ভিক্টোরিয়ার হয়ে উদিতির বিরুদ্ধে ২ ছক্কা ও ১৫ বাউন্ডারী সমেত কালার ৯২ রানের ইনিংসটি ছিলো সেরা ব্যাটিং নৈপুন্য। ক্রিকেট লীগ খেলেছেন টাউন ক্লাব ও ভিক্টোরিয়ার হয়ে। জাতীয় ক্রিকেট আসরেও খেলেছেন ঢাকা জেলার হয়ে। জাতীয় দলের সাবেক দলনায়ক খ্যাতিমান ক্রিকেটার রকিবুল হাসানের সাথে ব্যাট হাতে মাঠে নামতেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে।
ফুটবলার কালা শেরে বাংলা কাপ জাতীয় ফুটবলের আসরে টানা বেশ কবছর খেলেছেন ঢাকা জেলার হয়ে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম তিন তিনটে জাতীয় ফুটবল আসরে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জয়ের স্বাদ নিয়েছিলো কালার দল ঢাকা জেলা। ঢাকার ফুটবল লীগ লড়াইয়ে পুরান ঢাকার দল রহমতগঞ্জ ক্লাবের সেরা সাফল্যটি ছিলো ১৯৭৭ সালের লীগ মরসুমে। সেবার রহমতগঞ্জ ক্লাব দুবার ফাইনালে মুখোমুখি হয়ে আবাহনীর কাছে হেরে লীগ রানার্স আপ হয়েছিলো। কালা ছিলেন সেবার দলে অপরিহার্য্য এক খেলোয়াড়।
…উপরের ডানের ছবিটা আমার তোলা প্রিয় কালা ভাইয়ের শেষ স্মৃতি চিহৃ…আবাহনী ক্রিকেট মাঠে এক সময়ের স্বতীর্থ ক্রিকেটার দেশের ক্রিকেটের প্রথম শতরানের মালিক জহিরের সাথে কালা…ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস ওরা দুজনেই কিনা আজ ফ্রেমে বন্দি হয়ে গেছেন চির বিদায় নিয়ে…
Monjoor Milki
Feb 06. 2020
Sorry to hear. May Departed Soul Rest In Peace.