মনে পড়ে ক্রিকেটে দেশে-বিদেশে প্রথম ট্রফি জয়ী সেই দুদলের কথা

0-1984-88-2019-0                                       …১৯৮৪ সালে ঢাকা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ১ম দক্ষিন এশীয় ক্রিকেট আসরে রকিবুল হাসানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল ওয়ান ডে স্ট্যাটাস প্রাপ্তির আগে প্রথম কোন আন্তর্জাতিক আসরে চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করেছিলো…সেবার ৩ দেশকে নিয়ে অনুষ্ঠিত প্রথম দক্ষিন এশীয় ক্রিকেটে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ টাইগার্স নামে দুটো দল ছাড়াও হংকং-সিঙ্গাপুর অংশ নিয়েছিলো…সেবছর বলতেই হয় অনেকটা প্রত্যাশিত ভাবেই  যেন ফাইনালে হংকংকে(১৫১) তিন উইকেটে হারিয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জয় করেছিলো বাংলাদেশ দল…দীপুচৌধুরী(৩/১৭)-বাদশা(৩/২৯)-সামি(২/৩১) ও মিশার(১/১১) বোলিং নৈপূন্য এবং পরবর্তীতে ব্যাট হাতে লিপু(৪০)-বেলাল(৩৩)-নেহাল(৩২) ও ইউসুফ বাবু(২০) জ্বলে উঠলে বাংলাদেশ দল স্মরনীয় সাফল্যের স্বাদ নিয়ে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে…ফাইনালে ম্যান অব দি ম্যাচ  ছাড়াও আসরের সেরা খেলোয়াড় ছিলেন নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান গাজী আশরাফ লিপু…সেবার কোন বিদেশী দলের বিরুদ্ধে দেশের মাঠে প্রথম শতরান করার বিরল নজীড়টি গড়েছিলেন ঢ্যাশিং ব্যাটসম্যান রফিকুল আলম…সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে খেলায় ম্যাচ সেরা ক্রিকেটার রফিকের ব্যাট থেকে এসেছিলো মন মাতানো ১২৯ রান…সেবার প্রথম দক্ষিন এশীয় ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের খেলোযাড়রা হলেন দলনায়ক রকিবুল হাসান-লিপু-ইউসুফ বাবু-জাহাঙ্গীর শাহ বাদশা-সেলিম-দীপু চৌধুরী-বেলাল-ওমর খালেদ রুমি-সুরু-নেহাল হাসনাইন-মিশা-আজহার-সামি-ফয়সাল…

0-1984-SARC CHAMPION                                      …১৯৮৮ সালে দক্ষিন এশীয় ক্রিকেটের দ্বিতীয় আসরটি বসেছিলো হংকংএ…এতে হংকংয়ের দুটো দলের পাশাপাশি অংশ নিয়েছিলো বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর দল…এবারের আসরের ফাইনালে গাজী আশরাফ লিপুর যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল ফাইনালে হংকং(১৫১) দলকে ৫১ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জয় করে ঘরে ফিরেছিলো…ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ দল সংগ্রহ করেছিলো ২০২ রান…যার মাঝে স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান আতহার আলীর ব্যাট থেকে এসেছিলো মনকাড়া সর্বাধিক ৬৪ রান…এছাড়া নান্নু ৩৬,লিটন ২৬,মাসুম অপ: ১৬,নাসু অপ: ১৬,মিশা ১১ রান তুলেন…বোলিংএ বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ছিলেন কুশলী বোলার বাদশা…৮ ওভার বল করে ১৩ রানের খরচায় বাদশা তুলে নেন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট…এছাড়া আতহার আলী ২১ রানে ২টি এবং নান্নু,মিশা ও প্রিন্স লাভ করেন ১টি করে উইকেট…ব্যাটে-বলে চমৎকার চৌকস নৈপূন্য উপহার দিয়ে ফাইনালে সেরা খেলোয়াড় ছিলেন আতহার আলী খান…ফাইনালে ৬৪ রানের পাশাপাশি আতহার আলী হংকং এ দলের বিরুদ্ধে আসরে ব্যাক্তিগত সর্বোচ্চ ৯২ রান ছাড়াও সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধেও ব্যাটে ঝলক দেখিয়ে সংগ্রহ করেন ৭০ রান…ব্যাটে-বলে অতুলনীয় নৈপূন্য প্রদর্শনের মাঝে আসর সেরাও ছিলেন আতহার আলী খান…হংকংয়ের দক্ষিন এশীয় ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা হলেন দলনায়ক লিপু-নান্নু-আকরাম-জাহাঙ্গীর শাহ বাদশা-আতহার আলী খান-প্রিন্স-ফারুক-নাসু-জাহিদ রাজ্জাক মাসুম-সামিউর রহমান-ডাঃ মিশা-মোঃআলী-লিটন-জিয়াউল ইসলাম মাসুদ…

0-1988-HONGKOK SARC CHAMPION                                      ….নীচে গেলোকাল ১৭মে ২০১৯ সালে আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় ক্রিকেটে ওয়েষ্টইন্ডিজ(১৫২/১) দলকে হারিয়ে প্রথম বড় কোন আসরে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জয় করা বাংলাদেশ দল(২১৩/৫ ২২.৫ ওভার)…বৃষ্টি বিঘ্নিত ফাইনালে ২৪ ওভার ব্যাট করে ওয়েষ্টইন্ডিজ তুলেছিলো ১উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান…বৃষ্টির কারনে ম্যাচ বিলম্ভে শুরু হলে ২৪ ওভারে বাংলাদেশ দলের টার্গেট দাড়ায় ২১০ রানের বিশাল স্কোর…বলা চলে অসম্ভবকে সহজেই সম্ভব করে আগের ছয় বারের ফাইনালে ব্যার্থতাকে মুছে ফেলে স্বল্প ওভারে রেকর্ড গড়া বড় স্কোর পাড় করে স্মরনীয় এক অসাধারন জয় ছিনিয়ে নিয়ে প্রথম বারের মত বড় কোন ত্রিদেশীয় আসরে চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করে বাংলাদেশ দল…ফাইনালে আঘাতজনিত কারনে দলের বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিবকে ছাড়াই খেলতে নেমেছিলো বাংলাদেশ দল…তারপরও বড় স্কোর তাড়া করতে যেয়ে বিশেষ করে সৌম্য-মোসাদ্দেক-মুশফিক এই তিনজনার দৃষ্টিনন্দন মার মার কাট কাট ব্যাটিং বাংলাদেশ দল ৭বল হাতে রেখেই ২১৩ রান তুলে নিয়ে দলকে ট্রফি জয়ের পেছনে বড় ভূমিকাই রাখেন…ওপেনার সৌম্য শুরুতেই মনের আনন্দে হাত খুলে চার ছক্কার সমাহারে বোলারদের অসহায় করে তোলেন…সৌম্য অসাধারন শুরুটা করে ৪১ বলে ৯চার ও ৩ ছক্কা হাকিয়ে ৬৬ রান তুলে দলকে অনেকদুর নিয়ে যান…এরপর অভিজ্ঞ মুশফিক স্বভাবজাত ঢংএ ২২ বলে মূল্যবান ৩৬ রান তুলে বিদায় নেন ২টি করে চার-ছক্কার মার মেরে…এরপর অকল্পনীয় ভাবে অসাধারন ফিনিশিংটা দেন সাকিবের বিকল্প হিসেবে মাঠে নামা আগামীর সম্ভাবনাময় প্রতিভা চৌকস ক্রিকেটোর মোসাদ্দেক সৈকত…মাত্র ২৪ বলের মোকাবেলায় ভিষন মারমুখো ভঙ্গিতে ২চার ও সর্বাধিক ৫টি বিশাল ছক্কার সমাহারে  মোসাদ্দেক তার ঝুলিতে জমা করেন নয়নজুড়ানো অপরাজিত ৫২ রান…এছাড়া রিয়াদ অপরাজিত ১৯,তামিম ১৮,মিথুন ১৭ রান তুলে দৃড়তা দেখালে বাংলাদেশ জয়ের লক্ষে অনায়াসেই পৌছে যায়…ওদিকে ওয়েষ্টইন্ডিজের একটি মাত্র উইকেট তুলে নিয়েছিলেন মিরাজ…এআসরে প্রতি ম্যাচেই যেন মাশরাফি বাহিনীর ছিলো ভিন্ন চেহারা…সবার খেলাতেই ছিলো আস্থা-নির্ভরতার ছোয়া…ছিলো জয়ের নেশাটা প্রবল…তাইত প্রতি খেলাতেই নির্ভার থেকে সহজ জয়ের মুখ দেখাটা হয়েছে প্রত্যাশিত ভাবেই…বিশ্বকাপের ঠিক প্রারম্ভে এ আসরে অপরাজিত থেকে এমন এক স্মরনীয় সাফল্য আসন্ন বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভাল কিছু উপহার দেবার বার্তাটাই যেন ক্রিকেট বিশ্বকে দিল মাশরাফি বাহিনীর বাংলাদেশ দল…সময়টা এখন বিশ্বকাপে ভাল ফলাফল দেখার অপেক্ষা মাত্র…

0-2019-TRI NATION CHAMPION

No comments.

Leave a Reply