ভাবাই যায়না ঢাকা লীগের এক ম্যাচে একই সাথে ১৯জন ফুটবলারকে হলুদ কার্ড দেখালেন রেফারী

                           …ফুটবল মাঠে ফাউলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ-ধাক্কাধাক্কি-হাতাহাতির ঘটনা নতুন কিছু নয়…অহরহ ঘটেছে এসব এবং ঘটছেই…ঢাকা ফুটবল মাঠে মারামারির জের ধরে জেল হাযতে যাবার ঘটনাও ঘটেছিলো…তবে কখনও দেখা হয়ে উঠেনি এক ডজনেরও বেশী ফুটবলারকে একসাথে হলুদ কার্ড পাওয়ার দৃশ্য…ভাবা যায় দেশের ফুটবলের প্রানকেন্দ্র ঢাকার ফুটবল লীগ আসরের এক খেলায় একই সাথে সর্বাধিক রেকর্ড সংখ্যক ১৯জন ফুটবলারকে হলুদ কার্ড দেখিয়েছিলেন রেফারী !!…আর সব মিলিয়ে  সে খেলায় ২০জন খেলোয়াড় পেয়েছিলেন হলুদ কার্ড…ঐতিহাসিক নজীড়বিহীন ওমন ঘটনাটি ঘটেছিলো আজ হতে ৩১ বছর আগে ১৯৮৭ সালের ঢাকা প্রথম বিভাগ লীগ আসরে…অফিস দল বিপিডবলিউডি ও চলন্তিকা ক্লাব দলের মধ্যকার লীগ লড়াইয়ে রেফারী হলুদ কার্ড দেখিয়েছিলেন একযোগে ১৯জন সহ ম্যাচে রের্কড সংখ্যক মোট কুড়িজন খেলোয়াড়কে…একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে মাঠে খেলোয়াড়দের মাঝে মারামারির সূত্রপাত ঘটে আর রেফারী সেদিন এত্ত গুলো হলুদ কার্ড দেখিয়েছিলেন…যা কিনা ঢাকার ফুটবলে ইতিহাস হয়ে রয়েছে…

1987-(294)-3                                  ‘৮৭-র লীগ আসরে বৃষ্টি ভেজা পিচ্ছিল মাঠে বিপিডবলিউডি ও চলন্তিকা ক্লাব এই দুদল বেশ ভাল ভাবে লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছিলো…খেলার প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য ভাবে…এঅর্ধে বিপিডবলিউডি গোলের বেশ কটি সুযোগ হাতছাড়া করার ফলে এগিয়ে থাকার সুযোগ হেলায় হারায়…বিপিডবলিউডির রঞ্জু একাই দুটো সহজ সুযোগ নষ্ট করেন…তাছাড়া তিন তিনবার চলন্তিকার গোলরক্ষক দীলিপ চমৎকার দক্ষতায় গোলের শট রুখে দিয়ে তার দল চলন্তিকা ক্লাবকে নিশ্চিত গোল খাওয়া থেকে বাচিয়ে দিয়েছিলেন…দ্বিতীয়ার্ধের খেলাও আক্রমন পাল্টা আক্রমনের মধ্যদিয়ে শুরু হয়…তবে গন্ডগোলটি বাধে ২য়ার্ধের খেলার ১৪ মিনিটের মাথায়…বিপিডবলিউডির স্ট্রাইকার গাউস বল নিয়ে বিপদ সীমানায় ঢুকে পড়লে তাকে আটকাতে গিয়ে ফাউল করে বসেন চলন্তিকার ব্যাক নোটন…আর তাতেই দুলের দুই গোলকিপার বাদে বাকি সব খেলোয়াড়রাই এক যোগে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন…পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে রেফারী ও দুই লাইন্সম্যানকে…পরিস্থিতি শান্ত হলে সেদিনের রেফারী লাইন ধরে দু দলের ১৯জন ফুটবলারকে দাড় করিয়ে রেখে এক যোগে হলুদ কার্ড প্রদর্শন করে ঢাকা লীগ ফুটবলে নতুন রেকর্ডের জন্ম দিয়েছিলেন…এঘটনার আগেই অবশ্য হলুদ কার্ড পেয়েছিলেন বিপিডবলিউডির ব্যাক আনন্দ…সেদিন অভূতপূর্ব নজীর স্থাপন করে এক খেলায় মোট ২০ ফুটবলারকে হলুদ কার্ড প্রদর্শনের রেকর্ডটি স্থাপন করেন রেফারী মোঃ শহিদুল্লাহ…শুধুমাত্র দুই দলের গোলরক্ষক হলুদ কার্ড মুক্ত ছিলেন (বিপিডবলিউডির গোলকিপার মিনার ও চলন্তিকার গোলকিপার দীলিপ)…

                                 …২০ হলুদ কার্ড দেখানোর ম্যাচে যাকে ফাউলের ঘটনার জন্য লন্কা কান্ডটি ঘটেছিলো সেই বিপিডবলিউডির স্ট্রাইকার জাতীয় দলের সাবেক তারকা ফুটবলার গাউসের সাথে সেদিনের খেলা নিয়ে স্মৃতিচারন করা হলো খানিক আগে…গাউস বলেন সেই ২০ হলুদ কার্ডের স্মৃতিটা আজও মন থেকে মুছে যায়নি…স্মৃতিটা চোখে ভাসে…বৃষ্টি ভেজা কাদা মাঠে সুবিধাজনক অবস্থান থেকে বলটা পেয়ে গোল করার লক্ষে চলন্তিকার বিপদ সীমনায় ঢুকে পড়ার মুহূর্তেই ফাউল করে বসে চলন্তিকার ব্যাক নোটন…শুরু হয় দুজনার মাঝে ধাক্কাধাক্কি…আর তাতেই জড়িয়ে পড়ে অনেকে…কজন হাতাহাতিতে জড়ালেরও কেউ কেউ এগিয়ে এসে ধাক্কা দিয়ে খেলোয়াড়দের সড়িয়ে  সংঘর্ষ মেটাতে চেষ্টায় ছিলেন…আর রেফরী কিনা একযোগে সবাইকে দাড় করিয়ে আমাকে সহ একসাথে মোট ১৯জনকে হলুদ কার্ড প্রদর্শন করে নজীড় বিহীন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বসলেন…সত্যি করে বলতে কি আসলে ব্যাপারটা অতটা সিরিয়াস ছিলোনা যে ১৯জনকে একযোগে কার্ড দেখানোর মত…

No comments.

Leave a Reply