বিশ্বকাপ ফুটবল এলেই সখের জমানো কোটপিন সংগ্রহের স্মৃতি গুলো খুব করেই মনে পড়ে

kironkotpin22

…ডানে দৈনিক কালেরকন্ঠ পত্রিকায় আমার সখের নেশা কোটপিন সংগ্রহ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন…

                                       …বিশ্বকাপ ফুটবল এলেই আমার সখের সংগ্রহ শালায় স্বযত্নে জমিয়ে রাখা কোটপিন গুলোর স্মৃতি জেগে ওঠে…মনে পড়ে টোকিওতে থাকার সময়ে ২০০২ জাপান বিশ্বকাপ ও ১৯৯৪ সালের হিরেশিমা এশিয়ান গেমসের সময়টায় নানা ভাবে কোটপিন গুলো সংগ্রহ করেছিলাম…বিশ্ব ফুটবলের সব কোটপিনই ছিলো কেনা…কিছু এশিয়ান গেমসের সময়ে নানা দেশের সাংবাদিক ও অফিসিয়ালের সাথে অদল বদল করে পাওয়া…এগুলোর মাঝে রয়েছে বিশ্বকাপ ফুটবলের চ্যাম্পিয়ন দল ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স-জার্মান-স্পেন-ইটালী-উরুগুয়ে-ইংল্যান্ড সহ অংশ নেয়া প্রায় সব দল গুলোর কোটপিন…আছে বিশ্ব ক্লাব ফুটবলের সেরা দল মেসির বার্সেলোনা-রোনাল্ডোর রিয়াল মাদ্রিদ ও নেইমারের পিএসজি সহ অনেক নামী দামী দলের কোটপিন…

kiron kotpin 103-000                                   …কোটপিন গুলো সংগ্রহের মজার ঘঠনাও রয়েছে…যার দুএকটি ঘঠনা না উল্লেখ করলেই নয়…১৯৯৪ সালের জাপানের হিরোশিমা এশিয়ান গেমস কাভার করতে যাবার পরপরই ডির্পাটমেন্টাল স্টোর হতে কিনে নিয়েছিলাম আট বছর পরের ২০০২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক দেশ জাপানের কোটপিন…ওটার সাথে পেয়ে যাই বিশ্বকাপ জাপানের মেম্বার কার্ড…সে সময়েই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো ২০০২ বিশ্বকাপের আরেক আয়োজক দেশ দক্ষিন কোরিয়ার কোটপিনটা কিভাবে সংগ্রহ করা যায়…হিরোশিমা এশিয়ান গেমস চলাকালীন সময়ে তাই খুজছিলাম কোরিয়ান সাংবাদিক…বাংলাদেশ দলের হকি ম্যাচ দেখতে যাবার সময়ে বাসেই পেয়ে গেলাম কোরিয়ান এক সাংবাদিক…বসেছিলো বাসের শেষ প্রান্তে….ওসময় বাংলাদেশ দলের সাথে যাবার কারনে পাওয়া আমার অফিসিয়াল ব্লেজারে লাগানো ছিলো অনেকগুলো কোটপিন…জাপান বিশ্বকাপ কোটপিনটি শোভা পাচ্ছিলো একেবারে ওপরে…কোরিয়ান সাংবাদিকটির কাছে গিয়ে পরিচয় দিয়েই আমার কোটপিন সংগ্রহের কথা বলে তার কাছে থাকা সেই কোরিয়া বিশ্কাপের উপলক্ষে বের করা কোটপিনটি চেয়েছিলাম…সোজাসুজি বলেই দিল দুঃখিত কোটপিনটি তোমাকে দিতে পারছিনা আমার কাছে একটি মাত্র রয়েছে বলে…এখানে স্মরনযোগ্য যে  ১৯৯৪ সালে কিন্ত চূড়ান্ত হয়নি জাপান নাকি কোরিয়া বিশ্বকাপ আয়োজক দেশ হবে…সুযোগ বুঝে এসময় আমার ব্লেজারের একেবারে ওপরে লাগানো ২০০২ সালের জাপান বিশ্বকাপ কোটপিনটি দেখিয়ে বল্লাম তাকে দেখেছ এটা কি…বল্লো জাপান বিশ্বকাপ কোটপিন…বল্লাম তাকে দেখ যদি তুমি আমাকে তোমার দেশের বিশ্বকাপ কোটপিনটি না দাও তাহলে আমি মনে প্রানে চাইব তোমরা নও জাপানই যেন আয়োজক দেশ হবার সুযোগটি পায়…বলা মাত্রই দেখলাম কোরিয়ান সাংবাদিকটির মন গলে গেল…বল্লো ওয়েট ওয়েট…তোমাকে দিতে পারি তবে একটা শর্ত আছে…শর্তটা কি জানতে চাইলে বল্লো জাপানের কোটপিনটি খুলে সবার নীচে লাগাতে হবে আর আমারটা ওপরে লাগালেই দেব…খুশি মনেই বল্লাম ব্যপারনা তাই করা হবে…ব্যাস পেয়ে যাই কোরিয়ান বিশ্বকাপ কোটপিনটি…নাটকীয় এমন খুশির গল্প কাহিনীর মাঝেও হতাশার চিত্রও রয়েছে…২০০২ সালে জাপানে বিশ্বকাপ ফুটবল চলাকালীন সময়ে বের করা প্রায় অর্ধশতাধিক কোটপিন কিনেছিলাম…যা রাখাছিলো আমার ঘরের আলমারির ড্রয়ারে…ওটা খোলাই থাকত সব সময়ে…হঠাৎ একদিন খুলে দেখি তার চার ভাগের তিনভাগ কোটপিনই হাওয়া হয়ে গেছে…ভাবতেই পারিনি কোন কাছের বন্ধু কোটপিন গুলো না বলে চুপিসারে পকেটে ভরে নিয়ে যাবে…যা মনে পড়লে আজও ভিষন কষ্ট লাগে…

kiron news300                                       …হিরোশিমা এশিয়ান গেমস চলাকালীন সময়েও মজার দুটো ঘঠনা রয়েছে…মিডিয়া সেন্টারে বহু বছর পর ফের এশিয়ান গেমসে অংশ নেয়ার সুযোগ পাওয়া তাইওয়ানের সাংবাদিকের কাছে পরিচয় দিতেই বলে উঠলো ওহ বাংলাদেশ…দেখলাম বাংলাদেশ নামটা শুনেই দারুন খুশির বহিঃপ্রকাশ তার…এসময় বল্লাম আমি তোমার সাথে কোটপিন একচেঞ্জ করতে চাই…অবাক কান্ড আমি বাংলাদেশের একটি কোটপিন দিতেই সে আমাকে হাসি মুখে তার দেশের ৩টি কোটপিন দিয়ে দিল!!!…মুগ্ধ হলাম তাইওয়ানের সাংবাদিকটির ব্যবহারে…এরপর ছুটে গিয়েই এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ দলের সাথে যাওয়া সিনিয়র সাংবাদিক শ্রদ্ধেয় আতাউল হক মল্লিক ভাইকে ব্যপারটা খুলে বলি…মল্লিক ভাইত আমার কথায় বিশ্বাসই করতে পারলোনা…বল্লাম তাকে আপনি ট্রাই করেন দেখবেন তাই হবে…মল্লিক গেলেন আর ঠিক তাই হলো…ফিরে এসে মল্লিক ভাই বল্লেন সত্যিইত…ওরা এতটা ভাল কেমন করে…পাশাপশি থাইল্যান্ডের সাংবাদিকের আচরন ছিলো ঠিক তার উল্টো…বড্ড স্বার্থপর ও সৌজন্যবোধহীন থাই সাংবাদিকটি বলে কিনা তুমি দুটো দিলে আমি একটি কোটপিন তোমাকে দিতে পারি…মুখের ওপরেই বল্লাম প্রয়োজন নেই তোমার দেশের কোটপিন…আরেকবার গেমস ভিলেজে গিয়েছিলাম একটা কাজে…লক্ষ করলাম আরব দেশের এক অফিসিয়াল এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে…বুঝলাম আমার গায়ে জোড়ানো ব্লেজারে কোটপিনের দিকেই তার নজড়…হঠাৎ দেখি দুর হতেই ইশারায় আমাকে ডাকছে…কাছে যেতেই জানতে চাইলো কোন দেশ থেকে এসেছি আর এত্ত কোটপিন পেলাম কেমন করে…বল্লাম কোটপিন কালেকশন করাটা আমার এক সখের নেশা…বল্লো ওহ গুড…ক্ষানিক পরেই তার পরিচয়টা দিয়ে বল্লো তার দেশ কুযেতের কোটপিন আমার সংগ্রহে আছে কিনা…বল্লাম সরি তোমার দেশ কুযেতের কোন কোটপিন আমার সংগ্রহে নেই…বলা মাত্রই বুঝে নিলাম কুয়েতের ভদ্র লোকটির কাছে ব্যপারটা অপমানজনক বলেই মনে হলো…সাথে সাথেই তিনি তার পোষাকে লাগিয়ে রাখা কুয়েতের বড় সাইজের একটা কোটপিন খুলে আমাকে দিয়ে বল্লেন নাও এটা এবং সাজিয়ে রাখ তোমার ব্লেজারে…আহ কি যে মুগ্ধ ও খুশি হয়েছিলাম তখন কুয়েত দলের কর্মকর্তাটির আন্তরিক ব্যবহারে…চোঁখে ভেসে উঠলো সে সময় মিডিয়া সেন্টারে থাইল্যান্ডের সাংবাদিকটির নিলর্জ্য আচরন…বলে কিনা দুটো দিলে একটি দেব!!!…জাপান হতে দেশে ফিরে আসার পর কোটপিন আর সেভাবে কালেকশন করা হয়ে ওঠেনা…তারপরও কাছের পরিচিতজনরা যখন খেলা দেখতে নানা দেশে যায় তখন তাদের অনুরোধ করে বেশ কিছু কোটপিন সংগ্রহ করা হয়েছে…কৃতজ্ঞচিত্তেই স্মরন করছি ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ববি ভাই,টিভি চ্যানেল ২৪ এর স্পোর্টস এডিটর দিলু খন্দকার ও ইত্তেফাকের সিনিয়র স্পোর্টস রির্পোটার সোহেল সারোয়ার চঞ্চলকে…এদের কাছ থেকেও নানা সময়ে বেশ কটি কোটপিন পেয়েছি…আমার এই কোটপিন সংগ্রহের দিকটা তুলে ধরে দৈনিক কালেকন্ঠ,সমকাল পত্রিকা আর টিভি চ্যানেল দিগন্তটিভি ও সময়টিভি বিশেষ প্রতিবেদনও তুলে ধরেছিলো…যা কিনা আমার কোটপিন সংগ্রহের সখের নেশাটাকে আরো বাড়িয়ে দেয়…

...সময় টিভি ও দিগন্ত টিভিতে আমার সখের নেশা কোটপিন সংগ্রহ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন...

…সময় টিভি ও দিগন্ত টিভিতে আমার সখের নেশা কোটপিন সংগ্রহ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন…

No comments.

Leave a Reply