খ্যাতিমান ফিফা রেফারি মুনির হোসেন আর নেই

munir hossain3                               সাবেক খ্যাতিমান ফিফা রেফারি ফুটবল মাঠের অতি চেনা সবার প্রিয় মুনির হোসেন আর নেই(ইন্নালিল্লাহে…রাজিউন)। দীর্ঘদিন অসুস্থতায় ভুগে আজ বৃহঃপ্রতিবার ১০মে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে সবাইকে ছেড়ে চিরবিদায় নিয়ে না ফেরার জগতে চলে গেছেন ৮৪ বছরের প্রবীন এই ফুটবল ব্যক্তিত্ব মুনির হোসেন। তার মৃত্যুতে রেফারি অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

                                 মুনির হোসেন ছিলেন ফুটবলার। লিগ ফুটবলও খেলেছিলেন। তবে আঘাতে পড়ে খেলাটা ছেড়ে দিয়ে হাতে তুলে নিয়েছিলেন বাঁশি। অতঃপর একটা সময় দেশ সেরা খ্যাতিমান রেফারি হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছিলেন ফিফা ব্যাজধারী রেফারি মুনির হোসেন। দেখতে দেখতে বাঁশি হাতে মাঠেই কাটিয়ে দিয়েছিলেন মুনির হোসেন দুই দশকেরও বেশী সময়। শুরুটা ছিলো ’৬০ সালে আর শেষটা ছিলো ’৮৩ সালে। এর মাঝে সুনামের সাথে বাঁশি বাজিয়ে ’৭৩ সালে লাভ করেছিলেন ফিফা ব্যাজ। ঢাকা ও নানা জেলায় খেলা পরিচালনা করা ছাড়াও প্রখ্যাত ফিফা রেফারি মুনির হোসেন বাঁশি বাজিয়েছেন অনেক কটি দেশে। ’৭৭ সালে প্রথম জাতীয় যুব দলের সাথে কুয়েতে যেয়ে এশিয়ান যুব ফুটবলে খেলা পরিচালনা করেছেন। এছাড়াও রেফারি মুনির হোসেনের সৌভাগ্য হয়েছে থাইল্যান্ড-ইরান-ইন্দোনেশিয়া-নেপাল-ভারত-পাকিস্তানে একাধিক খেলা পরিচালনার।

munir hossain5

…বাঁয়ে ’৮২-র সেই কলন্কিত ম্যাচে ফুটবলারদের আক্রমনের মুখে রেফারি মুনির হোসেন…মাঝে স্টেডিয়াম ভাংচুরের ছবি…ডানে কারামুক্তির পর আবাহনী ক্লাবেটেন্টে চার ফুটবলার চুন্নু-হেলাল-আনোয়ার ও সালাউদ্দিন…

                       রেফারিং জীবনে মুনির হোসেনের বড় পাওয়া ছিলো ’৮১তে ক্রীড়া লেখক সমিতির ‘সেরা রেফারির’ পুরস্কার লাভ। বড় দুদল মোহামেডান ও আবাহনীর সেই ‘৮২সালের কলন্কিত মর্যাদার লড়াইটিতেও বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি মুনির হোসেন। দেশের ফুটবলের এক বড় কালো অধ্যায় যেন ছিলো সেই ম্যাচ। দুদলের ফুটবলাররা সেই খেলায় হাতাহাতির সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে গোটা স্টেডিয়াম এলাকা রনক্ষেত্রে পরিনত হয়। সেদিনের সংঘর্ষের ঘঠনার সূত্রে সামরিক শাসন আমলে শাস্তি সরূপ আবাহনীর জাতীয় দলের ৪ তারকা ফুটবলার সালাউদ্দিন-আনোয়ার-চুন্নু ও হেলালকে জেল হাজতেও যেতে হয়েছিলো। থাকতে হয়েছিলো জেলে সপ্তাহ দুয়েক।

                            মাঠ থেকে অবসরের পর মুনির হোসেন সংগঠক হিসেবে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন। রেফারি এ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন দীর্ঘদিন। ছিলেন কাবাডী ফেডারেশনেরও সাধারন সম্পাদক। মুনির হোসেন ’৮৮ হতে ২০০৪ সাল পর্যন্ত এশিয়ান কাবাডী ফেডারেশনের টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যানের বড় দায়িত্বও পালন করেছেন সুনামের সাথে।

munir hossain4

…বাঁয়ে ‘৮২-র আবাহনীর ফুটবলারদের শান্ত হতে বলছেন রেফারি মুনির হোসেন…ডানে একঝাঁক রেফারিরর মাঝে মুনির হোসেন…

No comments.

Leave a Reply