জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক ষ্ট্রাইকার মুস্তাকের অকাল মৃত্যু

MUSTAQজাতীয় ফুটবল দলের সাবেক কৃতি ষ্ট্রাইকার মুস্তাফিজুর রহমান মুস্তাক অকালেই চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে(ইন্নালিল্লাহে…..রাজিউন)…আজ ২২ এপ্রিল রোজ শুক্রবার মাত্র ৪৯ বছর বয়সে ব্রেইন ষ্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চীর বিদায় নিলেন টাঙ্গাইল ফুটবলে গর্ব ষ্ট্রাইকার মুস্তাক…তার অকাল মৃত্যুতে নিজ জেলা টাঙ্গাইলের ফুটবল অঙ্গনে নেমে আসে এক শোকের ছায়া…টাঙ্গাইলে ইষ্টএন্ড ক্লাবের হয়ে খেলেই ছিলো মুস্তাকের উত্থান…তরুন বয়সেই মুস্তাকের নামডাক ছড়িয়ে পড়েছিলো সবত্র…এরপরই ’৮৪ সালে মুস্তাক ঢাকা লীগের দল বিপিডব্লুডি ক্লাবের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়ে যান…রেলওয়ের খেলোয়াড় মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টু ও টাঙ্গাইলেরই কৃতি সন্তান আজকের রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী ও সে সময়ের বিপিডব্লুডির ফুটবল দলের কর্নধার এবং এক সময়ের বাফুফে সদস্য প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান মুন্সির কল্যানেই মুস্তাকের ঢাকা মাঠে পদচারনা শুরু হয়েছিলো…বলতে হয় ঢাকা মাঠে মুস্তাকের সূচনাটাই ছিলো চমক জাগানো…সেবার ২য় বিভাগ লীগে খেলেই হ্যাট্রিক করা ছাড়া সর্বাধিক ১৭ গোল করে তাক লাগান মুস্তাক…পরের বছরেই ’৮৫তে বিপিডব্লুডির হয়ে দেশের ফুটবলের প্রান ঢাকা প্রথম বিভাগে খেলে নিজেকে মেলে ধরেছিলোন দারুন ভাবে…মুস্তাক সে বছর নজড় কাড়া খেলা উপহার দিয়ে নেপালের খ্যাতিমান ষ্ট্রাইকার মোহামেডানের গনেশ থাপার সাথে যৌথ ভাবে লীগের ৩য় সর্বাধিক ৯ গোল করে রীতিমত তাক লাগিয়ে ছাড়েন…৯ গোলের মাঝে ফরাশগন্জের বিরুদ্ধে ছিলো একটি দৃষ্টিনন্দন হ্যাট্রিক…

Mustaq3

…’৯৩ সালে ক্রীড়জিগতে ১০ দলনায়ক নিয়ে আমার লেখা প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে মুস্তাক…ডানে জাতীয় দলের জার্সীতে মুস্তাক…

…মনে পড়ে ‘৮৫ সালের সে সময়টায় “ক্রীড়াজগত” ম্যাগাজিনে ”উঠে আসছে যারা” কলামে আমি ষ্ট্রাইকার মুস্তাককে নিয়ে লিখেও ছিলাম…খুব বেশী দিন অপেক্ষা করতে হয়নি তার কিছু পরেই মুস্তাক ’৮৫-র প্রেসিডেন্ট গোল্ড কাপে বাংলাদেশ সবুজ দলের হয়ে খেলার সুযোগ লাভ করেছিলেন নিজ যোগ্যতার গুনেই…আসরে সুইজারল্যান্ডের ডেভে স্পোর্টস ক্লাবের বিরুদ্ধে একটি গোলও করেছিলেন মুস্তাক…পরের বছর পাকিস্তানের কায়দে আযম ট্রফিতে বাফুফে একাদশ নামের বাংলাদেশ দলেও সুযোগ লাভ করেছিলেন মুস্তাক…নানা সময়ে মুস্তাক ঢাকা লীগে বিপিডব্লুডি-ওয়ান্ডরার্স ও ব্রার্দাসের হয়ে খেলেছেন…’৮৭ সালে মুস্তাক যেবার ওয়ান্ডারার্সের হয়ে খেলেন সে বছর প্রথম বারের মত সবাইকে চমকে দিয়ে ওয়ান্ডারার্স দলটি ফেডারেশন কাপ রার্নাস আপ হয়েছিলো মোহামেডানের কাছে হের গিয়ে…ওদিকে নিজ জেলা টাঙ্গাইল লীগে খেলা ছাড়াও মুস্তাক সে সময় খুলনা লীগে ব্যান্র্কাস ও রাজশাহী লীগে দিগন্ত প্রসারী দলে খেলে সুনাম কুড়ান…জাতীয় ফুটবল ও জাতীয় যুব ফুটবল টানা বেশ কবছর খেলেছেন দাপটের সাথে টাঙ্গাইল জেলার হয়ে…তবে এটা ঠিক নানা সময়ে আঘাতজনিত কারনে পিছিয়ে পড়ে মুস্তাক তার সেরাটা বেশী দিন মেলে ধরতে পারেননি…এর মাঝেও ঢাকা লীগ খেলে গেছেন প্রায় এক দশক সময়কাল…’৯৩ সালে বিপিডব্লুডি দলের দলনায়কও ছিলেন..

mustaq2…উপরের ছবিতে ষ্ট্রাইকার মুস্তাককে দেখা যাচ্ছে…ডানে পাকিস্তান সফরে বাফুফে একাদশ নামের বাংলাদেশ দলের দুই খ্যাতিমান তারকা গ্রেট মুন্না ও শিমুলের মাঝে মুস্তাক…ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস ডানের ছবির মুন্না-শিমুল ও মুস্তাক এতিনজনই আজ আমাদের মাঝে নেই…যারা চলে গেছেন না ফেরার ভূবনে…এতিনজনের আত্মার শান্তি কামনা করছি আর দোয়া করছি আল্লাহ যেন ওদের বেহেস্থ নসিব করেন…আমিন…

Mustaq4

…বামে বিপিডব্লুডি ক্লাবে ও ডানে ওয়ান্ডার্রাস ক্লাবে মুস্তাককে দেখা যাচ্ছে…

No comments.

Leave a Reply