…মুন্নাকে বড় বেশী মনে পড়ে…
…অকালে-অসময়ে অগনিত ভক্তদের রীতিমত কাঁদিয়ে তিনি চিরবিদায় নিয়ে চলে গিয়েছিলেন এজগতের মায়া ছেড়ে..সাল ২০১৫..১২ই ফেব্ররুয়ারী দিনটা তাই একজন উদার মনের ভাল মানুষের কথা খুব কষ্টের সাথেই মনে পড়ে ভিষন রকম..তিনি আর কেউ নন এ দেশের ফুবলের কিংবদন্তী তারকা ফুটবলার মোনেম মুন্না..বলব আমাদের ফুবটবলের মহা নায়ক ছিলেন মুন্না..ভালবাসার প্রিয় দল আবাহনী ও জাতীয় দলের সাফ্যলের জন্য কত না কি কীর্তি রেখেছেন..ভারতের অন্যতম সেরা দল ইষ্টবেঙ্গলের হয়ে খেলে হয়েছিলেন তিন বারের চ্যাম্পিয়নের মূল নায়ক..তার গুনের কথা লিখে যেমন শেষ করা যাবেনা..তেমনি মন থেকে মুছে যাবার নয় মুন্নার খেলার স্মৃতি..মুন্নার হাত ধরেই আবাহনী ও কলকাতার ইষ্টবেঙ্গল ক্লাব যেমন ঘরে তুলেছে অনেক কটি চ্যাম্পিয়ন ট্রফি তেমনি জাতীয় দল বিদেশের মাটিতে প্রথম চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জয় করার কৃতিত্ব দেখিয়েছিলো..১৯৯৫ সালে মায়ানমারের ইয়াংগুনে অণুষ্টিত চার জাতীর আর্ন্তজাতিক ফুবলে মুন্নার নেতৃতেই বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো..
মুন্নাকে দেখেছি দীর্ঘদিন খুব কাছ থেকেই..ছিলো দারুন সখ্যতা..প্রনোচ্ছল,বন্ধুসূলভ আর অমায়িক স্বভাবের বড় উদার মনের বড় মাপের ফুটবলার মুন্না ছিলেন আমাদের ফুটবলের স্বর্ণ যুগের কোটি ভক্তের প্রিয় খেলোয়াড়..ছিলেন তরুন খেলোয়াড়দের কাছে অতি আপন অভিাবকের মতই এবং এক অণুপ্রেণাদায়ক আদর্শ খেলোয়াড়..বড় আসরে মুক্তিযোদ্বার হয়ে যার সূচনা..শুরুটাই ছিলো চমক জাগানো..
..তাই মুন্নাকে লুফে নিয়েছিলো বড় দল ব্রার্দাস ইউনিয়ন ক্লাব..আবারও তাক লাগানো ফুটবলের উপহার..এবার সেই মুন্নাকে কেড়ে নেয় শক্ষিশালী চ্যাম্পিয়ন দল আবাহনী..তারপর টানা দীর্ঘদিন দেশে-বিদেশে দাপটের সাথে খেলেই নিজেকে দেশ সেরা হিসাবে অনেক বড় উচ্চতায় প্রতিষ্টিত করেছেন..সে সব গৌরবময় ঘটনাতো ঠাই করে নিয়েছে ইতিহাসের পাঁতায়..আর কোটি ভক্তের মনের গভীরে..যা ভাবলে আজও মনকে দারুন ভাবে আলোড়িত করে..নিয়ে যায় ফুটবলের সুখকর দিন গুলোর আনন্দময় মহুর্তে..
যে ঘটনার স্মৃতি না উল্লেখ করেই পারছিনা..খুব করেই মনে পরে ইষ্টবেঙ্গলে যখন প্রিয় মুন্না খেলছিলো তখন তার খেলা কাছ থেকে দেখা আর তাকে নিয়ে লেখার ইচ্ছেতেই আমি আর ইত্তেফাকের ক্রীড়া সাংবাদিক বন্দ্বু দিলু খন্দকার ছুটে গিয়েছিলাম কলকাতায়..ভালই হয়েছিলো..না গেলে মনকে হয়ত বিশ্বাসই করাতে পারতাম না কি অসাধারন খেলাটাই না মুন্না উপহার দিয়েছিলো. সেই সাথে কলকাতার ফুটবল পাগল ভক্তদের কতটা না আপন ও প্রিয় তারকা হয়ে নিজেকে ধরা দিয়েছিলো..যা কাছ থেকে দেখে মন ভরেনি শুধু গর্বে গাঁ ভাসিয়েছিলাম..
মুন্না কলকাতায় খেলেছিলেন এ্যাটাকিং মিড মিল্ডার হিসেবে..সাড়াটা মাঠ জুড়েই তার ছিলো গতিময় দাপটে পদচারনা..পেছনে এসে অতন্দ্র প্রহরীর মত দলকে যেমন বিপদ মুক্ত করেছেন তেমনি তীর্ব গতিতে নিপুনতার সাথে উপরে উঠে এক একজনকে কাটিয়ে সতীর্থদের গোল করার সুন্দর সুযোগও সৃষ্টি করে দিয়েছেন..শুধু কি তাই মুন্না একক প্রচেষ্টায় চোঁখ জুড়ানো গোল ও করেছেন বেশ কটি..এত করে প্রায় খেলাতেই মুন্না হয়ে উঠতেন জয়ের নায়ক..ম্যাচ সেরা শুধু নয় মুন্নাকে লীগ সেরা হিসেবেও সম্মানিত করা হয়েছে..
..দেখেছি ইষ্টবেঙ্গলের ম্যাচ রির্পোটে সে সময়ের দৈনিক পত্রিকার হেড লাইনের শিরোনামে থাকত মুন্নার নাম..কখনও লেখা হত ”মুন্নার গোলে ইষ্টবেঙ্গলের জয়”..নয়ত ”মুন্না জেতালেন ইষ্টবেঙ্গলকে”..দেখেছি ইষ্টবেঙ্গলের খেলার দিন হোটেল থেকে যখন মুন্না ষ্টেডিয়ামের দিকে রওনা হতেন তখন রাস্তায় রীতিমত ভীড় জমে যেত তাকে কাছ থেকে এক নজড় দেখার জন্য..মুন্নাকে নিয়ে যখন কোন রেষ্টুরেন্টে যাওয়া হত খাবার খেতে তখনও সে কি ভীড়..এমনকি মালিক পক্ষ খাবারের বিল টুকু নিতে চাইত না..শুধুই কি তাই মুন্নাকে প্রধান অতিথি করে অনেক কিছুরই উদ্ভোধনের ফিতা কাটা হয়েছে..বুঝতে বাকি থাকেনি দৃষ্টিনন্দন খেলা উপহার দিয়ে গ্রেট মুন্না কলকাতাবাসীর কতটা মন জয় করে নিয়েছিলেন..
..চ্যাম্পিয়ন দল ইষ্টবেঙ্গলের নায়ক মুন্নার দাপট রোধ করে জয়ের নেশাতে সে সময় কলকাতা মোহামেডান বলব একঝাক বাংলাদেশী তারকা খেলোয়াড়কে দলে ভিড়িয়ে খেলিয়েছিলো..দেখা গেছে কলকাতা মোহামেডানের ১১জনের মাঝে ৬জনই বাংলাশের..ভাবাই যায়না..৫ রক্ষনভাগের মাঝে ৪জনই ছিলো ঢাকা মাঠের খেলোয়াড়..কিপার কানন-সালাউদ্দিন-কায়সার হামিদ ও রেহান..মাঝ মাঠে রক্সি ও উপরে শাব্বীর..তবে এদর খেলিয়েও ইষ্টবেঙ্গলের বিপক্ষে হোচট খেয়েছিলো মোহামেডান দলটি..বলতে হয় মোহামেডানের হতাশা আর যন্ত্রনার নামটি ছিলো সেই মুন্না..সেদিনের খেলাতেও সেরা ছিলেন মুন্না..খেলা শেষে চোঁখে পড়েছিলো মোহামেডানের স্বদেশী খেলোয়াড় কায়সার হামিদ-শাব্বীর সহ সবাই এক সাথে কাছে এসে গ্রেট মুন্নাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন..
..দেশ বরোন্য তারকা ফুটবলার মুন্নার মৃত্যু দিনটায় হয়ত তার অগনিত ভক্তদের ব্যাতিথ করে..যেমন আমাকেও করে থাকে ভিষন ভাবেই..তবে অবাকই হতে হয় আর কষ্টও হয় যখন দেখি মুন্নার অতি প্রিয় ভালবাসার দল আবাহনী আর বাফুফে বেমালুম ভুলে থাকেন দিনটাকে..ব্যাপারটা বড়ই বেদনার ..মুন্নার সাথে খেলা বা তার কাছের আপনজন যারা আজ দেশের ফুটবলের বড় বড় কর্তা তাদের কিছু করা থেকে ভুলে থাকাটা সত্যি খারাপই লাগে..আজ মৃত মুন্নার আত্মার চাওয়া খুব ছোট করে মিলাদ বা একটা স্মৃতিচারন অণুষ্টান কি খুব বড় কিছু চাওয়া হয়ে যায় তার ক্লাব বা বাফুফের কাছে ????
..অনেক কিছুই লেখার ছিলো তবে মন চাইছে না..কিইবা হবে তাদের উদ্দেশ্য করে লিখে..বলবেন হয়তবা যে মরে গেছে সেতো গেছে..ভেবে কি লাভ..আজ কেন ফুটবলের এই দৈন্য দশা..কেন ফুটবলারদের ক্লাব প্রেম বা মমত্ববোধ নেই..খেলার প্রতি দরদ নেই..আন্তরিকতা নেই..দেশের হয়ে খেলে নিজেকে উজার করে দেবার মন নেই..কেন নেই তার জবাব যেন কর্মকর্তাদের কার্যকলাপের মাঝেই নিহিত..আজ অনেক কর্তাই বলেন এত টাকা দেই তবে ভাল খেলার দিকে খেলোয়াড়দের মন পাইনা..মনে রাখা উচিত ঠাকা দিয়ে অনেক কিছুই করা যায়..তবে সব নয়..
..মুন্না যে আবাহনী ক্লাবটির জন্য মরার আগ অবধি নিজেকে উজার করে দিয়েছেন..যে ক্লাবটির প্রতি তার দরদ-মায়া মমতা-ভালবাসা ছিলো প্রবল..একবারতো নিজের গোল্ডেন সময়ে বাদ্রার্সের রের্কড পরিমান ৩০ লাখ অফারও পকেটে ভরেননি..থেকেই গেছেন মায়ায় জড়ানো আপন ক্লাব আবাহনীতে..আজ মুন্না নেই অথচ তার মত ক্লাবের জন্য নিবেদিত প্রাণ এক বড় মাপের খেলোয়াড়ের জন্য কিছু করাতো পরে মৃত্যুর দিনটাতেও তার আবাহনী ক্লাবের নীরব ভূমিকা কতটা পীড়াদায়ক তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা..দুখ:জনক হলেও সত্য জীবনদশায় মুন্নার মত এমন কীর্তিমান ফুটবলারের হাতে দেশের সর্বোচ রাষ্ট্রীয় ক্রীড়া পুরস্কার উঠেনি!!!..জুটেছে মরনোত্তর..ভাবাই যায়না..তাও নাকি পাওয়া হতনা ওসময়টায় যদিনা আবাহনীর হকি কর্তা ও মুন্নার প্রিয় বন্ধু মরহুম পুসকিন ছুটাছুটি না করত!!!কি আর বলব…জাতীয় পুরস্কার প্রদানও আজকাল রাজনীতিতে আছন্ন!!
লিখতেই নিজের কাছেই খারাপ লাগছে..কষ্টও পাচ্ছে..আবাহনীর প্রান প্রিয় মুন্নার মৃত্যুর পর গত দশ বছরে তার ক্লাব দুবার মৃত্যু বার্ষিকী পালন করেছে বলে যানা নেই!!!..এমনও নাকি শুনতে হয়েছে মুন্নার মত অনেকেই খেলেছে সো কি হয়েছে!!এমনকি সময় সময় মুন্নার ছেলেকেও নাকি ক্লাবে ঢুকতে দেয়া হয়নি!!শোনা হলো আবাহনীরই প্রাক্তন এক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে..রাজনীতিকরন আর স্বার্থবাজ কর্তাদের ফুটবল ডন সেজে বসার কারনেই আজ মুন্নার মত সুপার ষ্টারের যেমন মূল্যায়ন নেই তেমনি ফুটবলের করুন দশা দীর্ঘ সময় ধরে..
কাল বাদে পরশু আগামী ১২ ফ্রেবুয়ারী গ্রেট মুন্নার ১০ম মৃত্যু বার্ষিকী..স্বাভাবিক ভাবেই ভুলে থাকবে বাফুফের প্রাক্তন খেলোয়াড় কর্তাগন..ভুলে থাকবেন তার ক্লাব কর্তারাও..তবে ভুলে যাবেন না তার অগনিত ভক্তক‚ল একথা বলাই যায়..ভুলে যায়নি ঠিকই তার ভিন দেশী ক্লাব ইষ্টবেঙ্গল এবং তাদের সমর্থকরা..ক্লাবের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে ”লিজেন্ড অব ইষ্টবেঙ্গল” পাঁতায় তুলে ধরা আছে আমাদের মুন্নার নাম..ঢাকার ফুটবলের দীঘদিনের নিয়মিত দর্শক আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ড শফিকুল ইসলাম শফিক ভাই বলছিলেন একদিন তার কলকাতা বেড়ানোর গল্প..অবশ্যই বিষয় ফুটবল আর সেই মুন্না..বলেন কলকাতার নিউ মার্কেটের রাস্তার ধারে এক দোকানে যখন চা পান করতে ঢু মারেন তখন দোকানের মালিক বাংলাদেশ থেকে এসেছি শোনা মাত্রই ফুটবলার মুন্নার খেলার প্রশংসার কাহিনী বলেই যাচ্ছিলো আর তাকে শ্রদ্ধা ভরেই বার বার স্মরন করছিলো..বলছিলেন শফিক ভাই যা শুনে গর্বে বুক ভরে যাচ্ছিলো..আর আমাদের কর্তাদের মুন্নার প্রতি চরম অবহেলা দেখে বুকটা আহাকার করে উঠে..কিই বা বলার আছে..
..শেষ হয়েছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল..ফেইসবুকে দেখলাম মুন্নার একমাত্র ছেলে গ্যালারীতে বসে খেলা দেখছেন..বহু কষ্টে টিকেট নাকি জোগাড় করেছেন বর্তমান জাতীয় দলের দলনায়কের কল্যানে..ভাবতেই কষ্ট হয়..বাফুফে জাতীয় দলের প্রাক্তন দেশ বরন্য তারকা ফুটবলার ও রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রাপ্ত মুন্নার পরিবারের জন্য একটা সৌজন্য টিকেটও দেয়ার প্রয়োজনীয়তা মনে করলোনা!!!..মেনে নেয়া যায়না..ব্যাপারটা কতটা যে পীরাদায়ক তা প্রাক্তন তারকা খেলোয়াড়ে ঠাসা বাফুফে কর্তাদের বুঝিয়ে দেবার কিছু আছে বলে মনে হয়না ছি ছি করা ছাড়া…
বরাবরের মতই ১২ ফেব্রুয়ারী দিনটি রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রাপ্ত ব্যাক্তিত্ব আমাদের ফুটবলের গ্রেট মুন্নাকে হয়ত ভুলে থাকবেন তার প্রিয় ক্লাব বা বাফুফের অনেকেই তবে নিশ্চিত করেই বলতে পারি ভুলে থাকতে পারবেন না ঢাকা তথা কলকাতার ফুটবল পাগল দর্শকরা…মুন্না আছেন অনেকেরই হৃদয়ের গভীরে…থাকবেন অনন্তকাল…মুন্না বড় মনে পড়ে তোমায়…ভুলিনি…ভুলবও না তোমায়…যেখানেই থাকো শান্তিতেই থাকো…আল্লাহ তাআলা যেন তোমায় বেহস্থ নসীব করেন এ প্রার্থনা করি…
Kishore
Feb 13. 2014
মুন্নার মত প্লেয়ার ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, হল্যান্ড, জার্মান, ইংল্যান্ড এর মত দেশে যদি জন্মাত, তবে নিশ্চিত ভাবে world famous কেউ হতে পারত! What a great soccer player he was! Rest in heaven, Munna!
mahfuz
Feb 20. 2014
Kiron vai Kolkata Mohammedan er Gk Hisabe mone HOi Ponir Khelesilo……Osadhoron Lekhaaa………..
admin
Feb 22. 2014
…dear Mahfuz bhai…yess chobite ponir ke dakha jachhe…tobe oi bosore kanon o khelechilo mSc te…tnx for comments…
md. t islam tarique
Feb 27. 2014
কিরন ভাই মুন্নার গায়ে মোহামেডানের জার্সি , এটা কি কোন ফ্রেন্ডলি ম্যাচের ছবি ?
Mahfuz
Apr 26. 2014
মুন্নার গায়ে মোহামেডানের জার্সি ….Munna ekbar CTG Mogammedan hoiee ek mousum ctg league e khelesiilo..eta tokhonkar pic..1993 e te…
Mahfuz
Apr 26. 2014
মুন্নার গায়ে মোহামেডানের জার্সি ….Munna ekbar CTG Mogammedan hoiee ek mousum ctg league e khelesiilo..eta tokhonkar pic
MuNnA
Sep 12. 2014
আমার মামারা নাকি মুন্নার বড় ভক্ত ছিলেন. আমার নামটা ওনারাই রেখেছিলেন……
admin
Feb 10. 2015
…darun…
Manjoor milki
Feb 11. 2015
Munna A Legend Was Pride Of Bangladesh.We The Football Fans R Proud Of Him. May His Soul Rest In Peace.
admin
Feb 11. 2015
…Milki bhai thanks for nice comments…yess munna ke niye amader gorbber shesh nei…