…হতাশার এক টেষ্ট…

..বাংলাদেশ বনাম শ্রীলন্কার খেলা মাঠে গড়ানোর আগেই  হতাশার শুরু..যে হতাশার শেষ খেলা শেষের পর..আইসিসির অযৌক্তিক প্রস্তাব ছিলো বাংলাদেশের টেষ্ট মর্যাদা কেড়ে নেয়া হবে..টেষ্ট খেলাটা হবে দুভাগে..আর ক্রিকেট রাজত্ব করবে ভারত-অষ্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ড..আরও কত কি সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে তারা..এটা নিয়েই জ্বলে উঠে বাংলাদেশের লাখো ক্রিকেট পাগল ভক্তরা..

..এরই মাঝে আমাদের ক্রিকেট বোর্ড প্রধানের প্রকাশ্যে এর তীব্র-জোড়ালো প্রতিবাদ না করে দুবাই যাবেন..তারপর হাওয়া দেখে মত জানাবেন ঘোষনা দিয়ে ক্রিকেট পাগল ভক্তদের আরো ক্ষেপিয়ে দিলেন…যখন খবর বের হয় আইসিসির অবাস্তব প্রস্তাবের পক্ষে নাকি বোর্ডের ২০ পরিচালকের নীরব সায় তখনি গোটা দেশের ক্রিকেট প্রেমিকরা তেলে বেগুনে জলে উঠলেন…

..ফলে যা হবার তাই হলো..ক্ষিপ্ত হয়ে হাজারও ভক্তরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে শাহবাগ চত্বরে সমাবেশও করে..দৈনিক পত্রিকা গুলোতেও ব্যাপারটা নিয়ে বেশ লেখালিখি করা হয়..এতে করে টনক নড়ে বোর্ড কর্তাদের..উপায় না দেখে ত্যাক্ষনিক ঘোষনা দেয় আমরা আইসিসির নয়া প্রস্তাবের বিপক্ষেই থাকব..হাতাশা আর গরম আবহাওয়াটা শীতল হতে না হতেই আবারও চরম হতাশায় ডুবিয়ে দিলো আমাদের ক্রিকেটাররা..

টেষ্ট খেলার শুরুতে কত আশায় না বুক বেধে ছিলো ভক্তরা…আইসিসির অগ্রহণযোগ্য প্রস্তাবের আর আমাদের টেষ্ট খেলাটাকে খাটো করে দেখার পাল্টা জবাব দেবেন ব্যাটে-বলে টাইগার ক্রিকেটাররা..আসলে মানুষ ভাবে এক আর হয় আরেকটা..হলোও যেন তাই..কোথায় মক্ষম সময়ে জিদ আর ক্ষোভের আগুনে জ্বলে উঠে আসল কাজটা করে নিজেদের যোগ্যতা দেখাবেন তা নাকরে এমন দায়িত্বহীন খেলা উপহার দিলেন যে হতাশায়-লজ্জায় মাতা নত হলো দেশের ক্রিকেট ভক্তদের..ভাবাই যায় না কেমন করে সব ওলোট পালট হয়ে গেলো..

..লন্কানদের সাথে এটা যে ওয়ানডে বা টি-২০ ম্যাচ নয়,খেলাটা যে টেষ্ট ক্রিকেট এটাই যেন ভুলে বসেছিলেন আমাদের খেলোয়াড়রা..ফলে যা হবার তাই হলো..বিশেষ করে ব্যাটসম্যানরা চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে তাড়া হুরা করে এমন ব্যাটিং করলেন যে আসল খেলাটাই ভুলে গেলেন..যা কিনা কোন ভাবেই সহজ করে দেখার মত নয়..ওদিকে বোলাররা কি মারটাইনা হযম করলো..এইত কিছু দিন আগের কথা..লন্কার মাঠে কি চমৎকার টেষ্ট খেলাইনা উপহার দিয়ে মন জয় করে ফিরে ছিলো মুশফিক বাহিনী..দলনায়ক মুশফিকের ব্যাট থেকে এসেছিলো চোঁখ মেলে দেখবার মত প্রথম দ্বিশতক রান..তরুন মোমিনুলও টেষ্ট খেলার সুয়োগ পেয়ে শতরান হাঁকিয়ে নিজেকে তুলে ধরেছিলেন দারুন ভাবে..অথচ এক দমকা হাওয়ায় সব কিছুই উল্টা-পাল্টা করে দিয়ে গেলো..ভাবাই যায়না..

যে মুশফিক লন্কানদের মাঠে টেষ্টে একাই করে দেখালেন ২০০ রান সেখানে ঢাকা টেষ্টে গোটা দলেরই উভয় ইনিংসে ২০০ রান পার করতে দম যায় যায় ভাব..প্রথম ইনিংসে ৬৩.৫ ওভার ব্যাট করে ২৩২ রান আর ২য় ইনিংসে ৫১.৫ ওভারে তোলা হয়  মাত্র ২৫০ রান..ওদিকে লন্কানরা  বোলারদের অসহায় করে তুলে নেয় ১৮৭.৫ ওভারে  ৬ উইকেটে ৭৯০ রান..ফলাফল বাংলাদেশ হেরে যায় ইনিংস ও ২৪৮ রানে..খেলার তুলে ধরার মত দিক হলো মহেলা জয়াবর্ধনের দ্বি শতক আর  ভিতাঙ্গে ও কুশাল সিলভার জীবনের প্রথম টেষ্ট শতরানের মুখ দেখা..দ্বিতীয় টেষ্টে ভাল কিছু করে দেখানোর জন্য এফলাফল যত তাড়াতাড়ি মন থেকে মুছে ফেলা যায় সেটাই হবে মঙ্গল..এবং আবারও আশায় বুক কেধে থাকা..কে যানে কি হয়..ভয়ও হয়..দেখা যাক কি হয়….আবারও হতাশায় না ডুবলেই হয়..

No comments.

Leave a Reply