বাংলাদেশের ওয়ানডে আন্তর্জাতিক ২৬২টি ম্যাচের ১০১ জন ক্রীকেটার

১৯৮৬ সালে শ্রীলংকার এশিয়া কাপ আসরে অংশ নেয়ার মাঝেই বাংলাদেশের আইসিসির স্বীকৃত ওয়ানডে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সূচনা হয়েছিলো…এরই মাঝে কেটে গেছে অনেক কটি বছর…বলতে হয় এঅবধি ২৬ বছরে বাংলাদেশ খেলে ফেলেছে ২৬২ টি ওয়ানডে ম্যাচ..১৩ দলনায়কের নেতৃত্ব দানের মাঝেই খেলানো হয়ে গেছে ১০১ জন ক্রীকেটারকে..আর দলের ওয়ানডে ম্যাচ খেলা হয়েছে ২৬২ টি..জয়ের মুখ দেখা হয়েছে মাত্র ৭২ বার…সিরিজ জয়ের রের্কড মাত্র ১৪ বার…যা এসেছে জিম্বাবুয়ে-কেনিয়-স্কটল্যান্ড-আয়ারল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড-ওয়েষ্টইন্ডিজ দল গুলোর বিরুদ্বে..এরমাঝে গর্ব করার বা তুলে ধরার মত হলো জিম্ববুয়েকে একবার ৫-০তে,নিউজিল্যান্ডকে ৪-০তে এবং ওয়েষ্টইন্ডিজ দলকে ৩-০তে ওয়াইট ওয়াশ করা..তাছাড়া জয়ের মুখ দেখা হয়েছে সব সেরা দলের বিরুদ্বেই..সবচেয়ে বেশী ৩০বার জয়ের মুখ দেখা হয়েছে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্বে..লিপুর হাত ধরেই শুরুটা ছিলো..তারপর সৌভাগ্যবান ১২ ক্রীকেটার বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেয়ার গৌরভ লাভ করেছেন..এরা হলেন নান্নু-আকরাম-দুর্জয়-বুলবুল-সুমন-পাইলট-সুজন-রাজিন সালেহ-আশরাফুল-মাশরাফি-সাকিব-মুশফিক…অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশী ২৯বার জয়ের মুখ দেখেছেন সুমন..
ওয়ান ডে ম্যাচে প্রথম শতরান উপহার দিয়েছিলেন ষ্টাইলিশ ওপেনার মেহরাব অপি..১৯৯৯ সালের ২৫ মার্চ ঢাকায় অনুষ্টিত খেলায় জিম্বাবুয়ের বিরুদ্বে অপির ব্যাট থেকে আসে নয়নজুড়ানো প্রথম সেঞ্চুরীটি..আগের ৪ ইনিংসে ৬-৪-৭৩-২৩ রান করার পরই ৫ম খেলায় গিয়ে অপি শতরানটি হাঁকিয়ে নিজেকে তুলে ধরেন..সে খেলায় যদিও বালাদেশ ৫উইকেটে ২৫৭ রান তুলেও হেরে যায়..


আর আর্ন্তজাতিক ওয়ানডে ম্যাচে প্রথম হ্যাট্রিক করার অনন্য নজীড় গড়েছিলেন ফাষ্ট বোলার শাহদত হোসেন…২০০৬ সালের ২ আগষ্ট হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্বে খেলায় ৩৯ ওভারের ৩-৪-৫ বলের মাথায় মুফামবিশি-চিগুমবুরা ও উ্যসুইয়াকে আউট করে শাহদত দূর্লভ হ্যাট্রিকটি করেন..তবে এখেলাতেও ২৩৬ রান তুলেও দল হেরে যায় ২ উইকেটে..
..তবে এঅবধি বিশ্বখ্যাত অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান একাই বেশকটি অসাধারন রের্কডের অধিকারী হয়ে নিজেকে যেন আলাদা উচ্চতায় তুলে ধরেছেন..১২৬টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে সর্বোচ অপরাজিত ১৩৪রান সহ এপর্যন্ত সর্বাধিক ৩৬৩৫ রান সাকিবের..একক ভাবে সর্বাধিক ৫টি শতরান ও সাকিবের..দ্বিতীয় সর্বাধিক ১৬০টি উইকেট দখলকারী বোলারও হলেন সাকিব..আর তাই সেরা অলরাউন্ডারও সাকিব…দলনায়ক হিসেবেও সফল ছিলেন সাকিব.. মাত্র ৪৭টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েই ২২ খেলায় দলকে জয়ের স্বাদ এনেদিয়েছেন..যার মাঝে ছিলো ওয়াইট ওয়াশের মাঝে নিউজিল্যান্ড ও ওয়েষ্টইন্ডিজ হারানো..
এছাড়া এঅবধি ১৩৩টি ম্যাচ খেলে একক ভাবে সর্বধিক ১৮৫টি উইকেট শিকার করেছেন লেগ স্পিনার রাজ্জাক..এরমাঝে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্বে একটি হ্যাট্রিকও রয়েছে..
এর বাইরে তুলে ধরার মত দিক হলো এবধি সর্বাধিক ১৬৯টি ম্যাচ খেলার কৃতিত্ব দেখানো খেলোয়াড় হলেন আশরাফুল..তার খাতায় জমা হয়েছে ৩৩৯৭ রান..আর অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে সফল হাবিবুল বাশার সুমন ..৬৯ খেলায় দলকে নেতৃত্ব দিয়ে জয় এনে দিয়েছেন সর্বাধিক ২৯ বার..সুমন ১১১টি ম্যাচ খেলে তার সংগ্রহ ২১৬৮রান..

এছাড়া আর্ন্তজাতিক ওয়ানডে ম্যাচে প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভের  কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন আতহার আলী খাঁন…১৯৯০ সালের৩১ ডিসেম্বর  কলকাতার এশিয়া কাপে শ্রীলংকার বিরুদ্বে আতহার সর্বোচ অপরাজিত ৭৮ রানের এক দৃষ্টিনন্দন ইনিংস উপহার দিয়েই ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন..প্রথম শতরান-প্রথম হ্যাট্রিক যেমন ছিলো স্বান্তনার তেমনি আতহারের ম্যান অব দ্য ম্যাচও..কারন এতিন খেলাতেই দল হেরে যায়..এখানে মজার ব্যাপার ওয়ানডে ম্যাচের প্রথম শতক আর অর্ধশত রান আসে চাচা-ভাতিজার ব্যাট থেকে..১৯৯০ সালের ২৮ এপ্রিল সারজাহ মাঠে অনুষ্টিত অষ্ট্রেলেশিয়া কাপে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্বে ওপেনার আজহার হোসেন শান্টু ১২৬ বলে ৪ বাউন্ডারির দ্বারা সর্বোচ ৫৪ রান করেছিলেন..আর তারই ভাইয়ের ছেলে ওপেনার অপি করেছিলেন প্রথম শতরান..

দুভাই আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন এমন নজীড় নাফিস ইকবাল ও তামিম ইকবালের এবং নুরুল আবেদীন নভেল ও মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর..এদের মাঝে শুধুমাত্র নান্নু-নভেলের একই সাথে খেলার সৌভাগ্য হয়েছে

এখানে আরেকটি নজীড়ের কথা না তুলে পারা যায়না..তা হলো দুই আপন ভাইয়ের একই সাথে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ খেলা..১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ ছিলো শ্রীলংকার এশিয়া কাপে বাংলাদেশের প্রথম অভিষেক ম্যাচ..লংকার বিরুদ্বে অভিষেক ম্যাচেই এক সাথে খেলেন দুই ভাই নুরুল আবেদীন নভেল ও মিনহাজুল আবেদীন নান্নু…এছারা দুভাই আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন এমন দৃষ্টান্ত আরও একটি রয়েছে..তবে এক সাথে খেলার সৌভাগ্য তাদের হয়নি..এ দুই ভাই হলেন নাফিস ইকবাল ও তামিম ইকবাল..যদিও এর আগে দুই ভাই বাংলাদেশ দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেছেন এমন নজীর রয়েছে..তবে তা আইসিসির স্বীকৃত ওয়ানডে ম্যাচ ছিলোনা..যেমন ইউসুফ বাবু-সামি,জাহাঙ্গীর-মনা,মিশা-মুনির..সেলিম-মাইনু..আর পিতা-পুত্রের বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলার দৃষ্টান্ত একটাই..যে অনন্য নজীড়টি হয় জাতীয় দলের দলনায়ক রকিবুল হাসানের পর  তারই বড় ছেলে সাজিদ হাসানের খেলার মাঝেই..

No comments.

Leave a Reply