রক্তে যার শতরানের স্রোত তার ব্যাটতো জ্বলে উঠবেই
রক্তে যার শতরানের স্রোত তার ব্যাটতো জ্বলে উঠবেই..দৃষ্টিনন্দন ষ্ট্রোকে ঠাসা অতুলোনীয় সেঞ্চুরী যেন তারই মানায়..টানা দুটো বা কখনও তিন শতক যেন তাই চমক মনে হয়না.. বলছিলাম তামিম ইকবাল খাঁনের কথা..
চট্রগ্রামের এক সময়ের অতি পরিচিত ও প্রিয় ক্রীড়া ব্যাক্তিত্ব মরহুম ইকবাল খাঁনের নাম হয়ত আজকের অনেকের কাছেই যেন অজানা..সত্তর-আশি দশকের চট্রগ্রামের অন্যতম সেরা ফুটবলার ও ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে করেছিলেন সুপ্রতিষ্টিত..ফুটবলে ঢাকা ষ্টেডিয়ামও মাতিয়েছিলেন..ঢাকার লীগ আসরের সর্বোচ গোল দাতার শীর্ষ তালিকায় ও খ্যাতিমান ষ্ট্রাইকার ইকবাল খাঁনের নামটি শোভা পেত..
খেলেছেন ক্রিকেটও..চট্রগ্রামের ক্রিকেটে সেরা ব্যাটসম্যানও ছিলেন ..১৯৭৯ সালে চট্রগ্রাম ক্রিকেট লীগের ইতিহাসে প্রথম সেঞ্চুরীটিও আসে ইকবাল খাঁনের ব্যাট থেকেই.. ইকবাল খাঁনেরই দুই সুযোগ্য পুত্র সন্তান হলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের দুই সময়ের দুই ওপেনিং ব্যাটসম্যান নাফিস ইকবাল খাঁন ও তামিম ইকবাল খাঁন..বড় ভাই নাফিস জাতীয় দল হতে দুরে সরে গেলেও তামিম খেলে যাচ্ছেন যেন রাজকীয় ঢংএ..জাতীয় দলের হয়ে এদুই ভাইয়ের ব্যাট থেকেই এসেছে মন মাতানো শতরান..
তামিমতো রীতিমত সেঞ্চুরীর রের্কডের পাতায় নিজের নাম লিখে রেখেছেন .. আর তাই লেখার শুরুতেই বলছিলাম রক্তে যার শতরানের স্রোত তার ব্যাটতো জ্বলে উঠবেই..দেশ সেরা ওপেনার তামিম চলতি জাতীয় কিকেট আসরে টানা ৩ইনিংসেই শতক হাকিয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন বড় করেই..এর আগে অবশ্য টেষ্ট কিকেটের বড় আসরে ইংল্যান্ডের মাটিতে লর্ডস ও ম্যনচেষ্টারের মাঠে টেষ্টের টানা দুই ইনিংসেই অসাধারন সেঞ্চুরী হাকিয়ে যেন বিশ্ব ক্রিকেটে তাক লাগান..
দেশ সেরা ওপেনার তামিম এবারের জাতীয় কিকেট লীগ আসরে চট্রগ্রামের হয়ে ঢাকা মেট্রোপলিশ দলের বিরুদ্বে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই ১ম ইনিংসে হাকিয়ে বসেন মন মাতানো ১৯২ রান..এরপর ২য় ইনিংসেও শতরানের মুখ দেখেন ১১৩ রান করার মাঝে..দ্বিতীয় খেলায় সিলেটের বিরুদ্বে ব্যাট হাতে নেমে আবারও জ্বলে উঠে তামিমের ব্যাট..১৮৩ রানের এক চোঁখ ঝলসানো ইনিংস উপহার দিয়ে ইতিহাসের পাতায় নিজের নামটি লেখান..জাতীয় ক্রিকেট লীগ আসরে টানা ৩ ইনিংসে শতরান এ এক অসাধারন কীর্তি..এখানে স্মরনযোগ্য যে জাতীয় লীগের আগে তামিমের লংকান টি-২০..বিশ্ব কাপ টি-২০ এবং ওয়েষ্ট ইন্ডিজ সফরের ৯টি ম্যাচে রান সংগ্রহ ছিলো মাত্র ১৯৪ রান..যার মাঝে সর্বোচ ছিলো মাত্র ৩৭রান..
খ্যাতিমান তারকা ব্যাটসম্যান তামিমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরী হাকিয়েছেন মোট ৭টি..এর মাঝে টেষ্টে হাকান ৪ শতক..২০০৮ সালে টেষ্ট অভিষেকের পর ১১তম ম্যাচেই তামিম প্রথম শতরানের মুখ দেখেন ওয়েষ্ট ইন্ডিজের বিরুদ্বে..করেছিলেন ১২৮ রান..এরপর ভারতের সাথে ১৫১ রানের ইনিংসটি ছিলো মনে দাগ কাটার মত..আর ইংল্যান্ডের মাটিতে লর্ডস ও ম্যানচেষ্টার টেষ্টের টানা দুই ইনিংসে সেঞ্চুরী ছিলো যেন আরেক ইতিহাস..অসাধারন ইনিংস দুটোর যবনিকাপাত ঘটে ১০৩ ও ১০৮ রানের মাথায়..এছাড়া আরো ৪টি টেষ্ট ইনিংসে শতরানের দাড় গোড়ায় গিয়েও সুযোগ হারান..এর মাঝে নিউজিল্যান্ডের সাথে ৮৪,ইংল্যান্ডের সাথে দুবার ৮৬ ও ৮৫ এবং ওয়েষ্ট ইন্ডিজের সাথে ৮৩ রান করে সাজ ঘরে ফেরেন..
এছাড়া একদিনের আন্তর্জাতিক খেলায় তামিমের ব্যাট থেকে ৩টি সেঞ্চুরী আসে হলো আয়ারল্যান্ড(১২৯ রান),জিম্বাবুয়ে(১৫৪ রান) এবং ইংল্যান্ডের(১২৫ রান)বিরুদ্বে..এছাড়া জিম্বাবুয়ের বিরুদ্বে দুবার ৯৫ ও ৮০ রান করে এবং সাউথ আফ্রিকার বিরুদ্বে ৮২ রানে বিদায় নিয়ে শতরানের সুযোগ নষ্ট করেন..
তারকা ব্যাটসম্যান তামিম তার বাবা মরহুম ইকবাল খাঁনের শতরান যেমন দেখতে পারেননি তেমনি বাবাকেও দেখাতে পারেননি আজকের এই সাফল্য..ব্যাপারটা যে তামিমকে ভিষন ভাবেই পীড়া দেয় তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা..চলতি জাতীয় লীগে তামিমের ব্যাট যে ভাবে জ্বলে উঠছে তা যেন আসন্ন ওয়েষ্ট ইন্ডিজ দলের বাংলাদেশ সফরের খেলা গুলেতে জ্বলে উঠে এবং বাংলাদেশ দলকে ম্যাচ জিততে একটা বড় ভুমিকা রাখুক তামিম এই প্রত্যাশা থাকলো..
Recent Comments