চিরবিদায় নিলেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক দলনায়ক খ্যাতিমান কিপার মোতালেব
…চিরবিদায় নিয়ে চলেই গেলেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক দলনায়ক ও লীগ ফুটবলে আবাহনী-রহমতগঞ্জ-অফিস দল বিজআইসি-সাধারন বীমা ফুটবল ক্লাবে খেলা খ্যাতিমান গোলরক্ষক মোতালেব…খেলাটা ছেড়ে গোল কিপিং কোচের দায়িত্বও পালন করেছিলেন বেশ কটি ক্লাবে…ছিলেন জাতীয় দলেরও গোল কিপিং কোচ…দীর্ঘদিন ধরেই এক সময়ের ঢাকা মাঠের গোল দূর্গের আস্থার প্রতিক কিপার মোতালেব অসুখে ভুগছিলেন…অবশেষে ২৪ সেপ্টেম্বর রোববার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে এজগতের মায়া ছেড়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে(ইন্নালিল্লাহে….রাজিউন)…এইত খুব বেশী দিন হয়নি টানা দুদিন বিদায় নিয়েছিলেন সাবেক দুই তারকা ফুটবলার আবাহনী ও মোহামেডানের শামসু ও আইনুল…তার রেশ কাটতে না কাটতেই হারাতে হলো মোতালেবকে…ওদিকে গুরুতর অসুস্থ জাতীয় দলের সাবেক দুই খ্যাতিমান তারকা ফুটবলার বাদল রায় ও মনু…সব মিলিয়ে ফুটবল অঙ্গনে এক শোকের ছায়া যেন নেমে এসেছে…
এক সময়ের জাতীয় দলের খ্যাতিমান গোলরক্ষক ছিলেন সুদর্শন খেলোয়াড় মোতালেব হোসেন। ঢাকা লীগ আসরে দীর্ঘদিন ধরে টানা সুনামের সাথেই খেলে মোতালেব কাটিয়ে দিয়েছিলেন ১৮টি বছর। মোতালেব লীগ খেলা শুরু করেছিলেন ’৬৯ সালে রহমতগঞ্জের হয়ে। এরপর ’৭৫ সালে বিজেএমসিতে যোগ দিয়ে দুটো মওসুম খেলেই ’৭৭ সালে আবারও যোগ দিয়েছিলেন রহমতগঞ্জ ক্লাবে। তিনবছর পর ’৮০তে যোগ দিয়েছিলেন অফিস দল সাধারন বীমায়। এরপর ’৮২তে লীগ ফুটবলের শীর্ষস্থানীয় জনপ্রিয় দল আবাহনীর হয়ে মোতালেব নির্ভরতার সাথেই খেলে যান কবছর। অবশেষে ’৮৭ সালে যেয়ে খেলা থেকে বিদায় নিয়েছিলেন কৃতি গোলরক্ষক মোতালেব। শেরেবাংলা কাপ জাতীয় ফুটবল আসরে মোতালেব বেশ কবছর খেলেছিলেন ঢাকা জেলার পক্ষে। গোলরক্ষক মোতালেব জাতীয় ফুটবলে ঢাকা জেলা ও লীগ লড়াইয়ে আবাহনীর হয়ে খেলে ”হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নের” স্বাদও নিয়েছিলেন। ’৭৩-’৭৪-’৭৫ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় ফুটবলের প্রথম ৩ আসরেই মোতালেবের দল ঢাকা জেলা শিরোপা জয় করেছিলে। ওদিকে আবাহনীর হয়ে খেলে ’৮৩-’৮৪-’৮৫ টানা তিন বছর লীগ শিরোপা জয়ের মাঝে হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নের স্বাদটি নিয়েছিলেন মোতালেব। এর মাঝে ’৭৭ সালে মোতালেবের দল রহমতগঞ্জ ক্লাব প্রথম বারের মত লীগ রানার্স আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিলো।
খ্যাতিমান গোলরক্ষক মোতালেব ’৭৩ সালে মারদেকা টুর্নামেন্টের জন্য প্রথমবারের মত গঠিত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে সুযোগ লাভ করে মালয়েশিয়া সফর করেছিলেন। এরপর ’৭৫ সালেও জাতীয় দলের হয়ে মালয়েশিয়ার মারদেকা টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়েছিলেন। একই বছর কিপার মোতালেব জাতীয় যুব দলের হয়ে খেলেছিলেন কুয়েতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান যুব ফুটবলের আসরে। মাঝে লম্বা সময় বিরতির পর ’৮২ সালে গিয়ে অভিজ্ঞ গোলরক্ষক মোতালেব আবারও জাতীয় দলে ফিরেছিলেন। খেলেছিলেন ঢাকার প্রেসিডেন্ট গোল্ড কাপ আসরে এবং দিল্লীর এশিয়ান গেমসে। এরমাঝে এশিয়ান গেমসের দলে মোতালেব ছিলেন জাতীয় দলের দলনায়ক।
খেলাটা ছেড়ে দিয়ে মোতালেব কোচিং পেশায় নেমেছিলেন ভাল ভাবেই। গোল কিপিং কোচ হিসেবে উচ্চতর প্রশিক্ষন নিয়েছিলেন ব্রাজিল(’৯৫)-পশ্চিম জার্মান(’৯৮) ও মালয়েশিয়ায়(’৯৩)। একটা সময় জাতীয় দলের কিপিং কোচের দায়িত্বও পালন করেছিলেন মোতালেব। ’৯৩ সাল হতে ২০০০সাল অবধি জাতীয় ফুটবল দলের কিপিং কোচ ছিলেন মোতালেব।
Recent Comments