..তাইজুলের নৈপূন্যেই নাটকীয় টেষ্ট জয়..

…রের্কড গড়া বোলিং আর দৃড়তাপূর্ন ব্যাঠিংএ টেষ্ট জয়ের নায়ক হলেন তাইজুল…

এ যেন গল্প নয়,সত্য…অসাধারন যেমন বোলিং তেমনি দৃড়তাপূর্ন ব্যাটিং…ক্যারিয়ারের তিন নম্বর টেষ্ট খেলতে নেমেছিলেন…আর তাতেই তাক লাগানো নৈপূন্যে টেষ্ট জয়ের নায়কের ভুমিকায় ২২ বছরের টগবগে তরুন তাইজুল…চারিদিকেই যেন এখন তাইজুল..তাইজুল ধ্বনি উচ্চারিত হচ্ছে …আর প্রশংসায় ভাসছেন…ভাবাই যায়না…প্রথম ইনিংসে দলের বিপদের মহুর্তে তার ৪৬ বলে বহু মুল্যবান ১৯ রানই বলতে হয় সফরকারী জিম্বাবুয়ের ২৪০ রান টপকে যাওয়া সম্ববপর হয়…বল হাতে মাত্র এক উইকেট নিলে যেন ক্ষুদাটা বেড়ে যায় ভিষন…অপেক্ষার প্রহর যেন গুনছিলেন ২য় ইনিংসে বল হাতে জ্বলে উঠার…কি আর বলব,জ্বলেই শুধু উঠেননি মন ছুয়ে যাওয়া রের্কড গড়া বোলিং করেও ক্ষান্ত হননি…আবারও ব্যাট হাতে দলের মহা বিপদ সংকতের সময়টায় এক প্রান্ত আগলে রেখে  দৃড়তা আর সাহসিকতার সাথে খেলে গেলেন…এটুকুন বল্লে কমই বলা হবে…বলতে হয় বীরের মত ব্যাট করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়লেন… ২য় ইনিংসে রের্কড গড়া সেরা বোলিং নৈপূন্যের ঝলক দেখিয়ে সর্বোচ ৮ উইকেট দখল আর অতি মূল্যবান অপরাজিত ১৫ রান সংগ্রহের মাঝে তাইজুলই হয়েছেন ম্যাচ সেরা…

…তাইজুলের জয়সূচক বাউন্ডারী মারার মহুর্তটা যে কতটা মূল্যবান ও স্মরনীয় তা আর খুলে বলার অপেক্ষা রাখেনা…

তাইজুল ব্যাট হাঁতে যখন মাঠে নামেন তখন ৭জন ব্যাটসম্যান ড্রেসিং রুমে…অপর প্রান্তে দলনায়ক মুশফিক…জয়ের জন্য তখনও প্রয়োজন ১৯ রানের…খেলার আর মাঠের দর্শকদের উত্তেজনা সে সময় তুঙ্গে…নিঃশ্বাস ফেলার যেন সময় নেই…হায় হায় করার মত অবস্থা…একি হয়ে গেলো,কি হতে যাচ্ছে ভাবনায় সবাই মগ্ন…হার্টবিট তখন বাড়ছেতো বাড়ছেই…দলনায়ক মুশফিক ওসময়টায় বিশ্বাস ও আস্থা রাখলেন তরুন তাইজুলের উপর…আর তাই এক রান নিয়ে প্রান্ত বদল করলেন কবার…অনেকেরই ভাবনায় তখন একি করছে মুশি…তবে দলনায়কের আস্থার প্রতিদান দিলেন সাহসী তাইজুল.. দেখে মনেই হচ্ছিলোনা চাপে পড়ে ভীত আছেন তাইজুল…বলতে হয় মুশিকেতো নীরব দর্শক বানিয়ে রেখে একাই খেল্লেন…ভাবা যায় জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ১৯রানের পার্টনারশীপে তাইজুলের মহা মূল্যবান হার না মানা ১৫রান…দর্শনীয় পুলে বাউন্ডারী হাঁকিয়ে তাইজুল তুলে নিলেন জয়সূচক রান…সাথে সাথে উল্লাসে মেতে উঠলো মাঠ ভরা দর্শক আর মুশি ও তাইজুল…দলনায়ক মুশি এতটাই মুগ্ধ হলেন তরুন তাইজুলের উপর যে জড়িয়ে ধরে উষ্ণ আলিঙ্গনে সিক্ত করেই ক্ষান্ত হননি,একপ্রান্তের ষ্টাম্প তুলে নিয়ে দিলেন তাইজুলকে স্মরনীয় জয়ের স্মারক হিসেবে রেখে দেবার জন্য…

…তাইজুলে মুগ্ধ দলনায়ক মুশি…

…দ্বিতীয় দিনের শেষ লগ্নে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৪ রানের লীড নিয়ে বাংলাদেশ যখন ইনিংস শেষ করে তখন কে ভেবেছিলো ৩য় দিন দু দলেরই দ্বিতীয় ইনিংস চমকে চমকে ভরে উঠবে…আর চরম নাটকীয়তা ও উত্থান পতনে হার্টবিট বাড়িয়ে দিয়ে মাঠ গরম হয়ে এক পর্যায়ে শীতল করে তুলবে…বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল ৩য় দিনের শুরুতেই এমন চমকের জম্ন দিবেন ভাবাই যায়নি…রীতিমত মাঠ গরম করে তোলেন অকল্পনীয় ভাবে তার ক্ষুরধার স্পিন যাদুতে স্বল্প সময়ে একের পর এক উইকেট দখলের মাঝে…শুরুটা করেছিলেন ওপেনার সিবান্দাকে আউট করে…আর ইতি টানেন শেষ ব্যাটসম্যান কামুনগোজিকে প্যাভেলিয়নে ফেরত পাঠিয়ে…ততক্ষনে নিজের ঝুলিতে জমা করে নেন রের্কড সংখ্যক ৮ উইকেট…এতে করে টেলর বাহিনীর জিম্বাবুয়ের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে মাত্র ১১৪ রানে…

…টেষ্ট সেরার পুরস্কার নিচ্ছেন তাইজুল…

…১০১ রানের সহজ জয়ের টার্গেটে সেকি হাঁসি আনন্দের বহিঃপ্রকাশ অগনিত দর্শক আর টাইগার ক্রিকেটারদের…কে যানত কথা নেই বার্তা নেই হঠাৎ করেই তুফান বইবে ক্ষনিক সময়ের জন্য…হলে যেন তাই…চিগুমবুরা ও পানিয়েঙ্গারার বলে দারুন এক চমক দেখা হলো…ইয়েস প্রথম বারের মতই…অকল্পনীয় ভাবে শূন্য রানের মাঝেই প্রথম তিন সেরা ব্যাটসম্যান তামিম-শুভ ও মুমিনুলের ঠিকানা হলো ড্রেসিং রুমে!!…হায় হায় রব উঠলো গোটা ষ্টেডিয়ামে…ব্যাটটা ঠিক ভাবে ধরার আগেই ভাগ্যক্রমেই লোপ্পা ক্যাচ তুলে দিয়ে নুতন জীবন পেয়ে গেলেন সাকিব ও রিয়াদ…দলের রান তখন দশের নীচে…কিন্তু হায় ৪৬ রানের মাথায় সাকিব(১৫) এবং রিয়াদ(২৮) ৬২ রানের মাথায় বিদায় নিয়ে দলকে বড় বিপদে ফেলে গেলেন…শুভাগত হতাশায় ডুবিয়ে এলেন আর গেলেন একই রানে…এসময় শাহদত কিছুটা দৃড়তা দেখালেন মুশফিককে সাথে নিয়ে…জয়ের জন্য ১৯ রান দূরে রেখে ১১ রান তুলে শাহদতও ফিরে যান…দলের রান তখন ৮২…এঅবস্থায় তাইজুল এসে নাটকের শেষ দৃশ্যটায় অভিনয় করলেন জাত অভিনেতার মতই…যার বর্ননাতো প্রথমেই দেয়া হয়েছে…৭ উইকেট হারিয়ে ১০১ রান তুলে নিয়ে ৩ উইকেটে জেতা হলো…বলতেই হয় তাইজুলের বোলিং-ব্যাটিংই ধরাশায়ী হলো জিম্বাবুয়ে দল…তাইত ম্যাচ সেরা তাইজুল…এতদিনে বেশ কবার তিন দিনেই হারের স্বাধ নেয়া হয়েছে আমাদের…আজ ২৭অক্টোবর প্রথম বারের মত তিন দিনের মাথায় উল্টো নেয়া হলো জয়ের স্বাধ…তবে এজয়ে বলব পুরোপুরি ভাবে পরিতৃপ্ত হওয়া যায়নি…ব্যাটসম্যানদের নিদারুন দায়িত্ব জ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ের কারনেই ছিলো যেন হতাশা…তাইত টেষ্ট জয়ের পর দেখা যায়নি ক্রিকেটারদের আনন্দে মেতে থাকতে…খেলার পর প্রেস ব্রিফিংএ দলনায়ক মুশফিকের চেহারায়ও চোঁখে পড়েনি নজড়ে পড়ার মত উৎফুল্লতা…যে ব্যাটিং কসরত প্রদর্শন করা হয়েছে তাতে দুশ্চিন্তাটা যেন বাড়িয়ে দিলো…কথায় আছে দিন ভাল যার সব ভাল তার…তাইজুলের ক্ষেত্রেই হলোও তাই…দিনটা শুরু করেছিলেন তাইজুল সিবান্দার উইকেট নিয়ে…আর শেষটা করলেন নয়ন জুড়ানো এক বাউন্ডারী হাঁকিয়ে জয়সূচক রান তোলার মাঝে…তাই দিনটা ছিলো যেন তাইজুলের…যেমন স্মরনীয় তেমনি মনে দাগ কাটার মত…এখানে স্মরনযোগ্য যে তরুন তাইজুল ওয়েষ্ট ইন্ডিজের মাটিতে জীবনের প্রথম টেস্টেই চমক দেখিয়ে ৫ উইকেট দখল করে নিয়ে যেন জানান দিয়েছিলেন ভাল ভাবেই উঠে আসার কথা…এরই মাঝে মাত্র ৩ টেষ্টে ১৭ উইকেট ঝুলিতে জমা করে দারুন কৃতিত্ব দেখিয়েছেন…নিজেকে সঠিক পথে ধরে রেখে তাইজুল আগামিতে আরো ভাল করুক এ প্রত্যাশা থাকলো…হাওয়ায় ভেসে যেন হারিয়ে না যাওয়া হয় নাসিরদের মত…ওদিকে বিয়ের পর দলনায়ক মুশফিক প্রথম খেলতে নেমেই হাঁকালেন এক দায়িত্বশীল হাঁফ সেঞ্চুরী…দ্বিতীয় ইনিংসে বিপদের মহুর্তে দৃড়তাপূর্ন অপরাজিত ২৩ রান তুলে টেষ্ট জয়ের স্বাধ নিয়েই মাঠ ছাড়লেন…তবে ব্যাটসম্যানদের চরম ব্যার্থতার দুর্শ্চিন্তা তার আনন্দটা যেন মাটি করে দেয়… যেখানে প্রথমে চাপহীন অবস্থায় ২৪০ টপকাতেই ঘাম ঝড়াতে হয় আর পরের বার মাত্র ১০১ রান তুলতেই শ্বাস যায় যায় অবস্থা সেখানে জয়ের আনন্দ করার মত মন থাকে বলে মনে হয়না…সহজ কাজটাকেই করা যেন হলো অসাধ্য করে তুলে…দুর্বল দলের সাথে এমন হাল স্বাভাবিক মেনে নেয়া যায় না…

…টেষ্ট সেরা তাইজুলকে নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি দলনায়ক মুশফিক…

…প্রথম টেষ্টের মাঠ ভরা দর্শক দেখে অবাক না হয়ে পারা যায়না…টেষ্ট ক্রিকেটে এমন দৃশ্য যে কমই দেখা যায়…চলতি বছরে টানা হারের লজ্জায় জর্জরিত থাকার পর কষ্টার্জিত এজয়ে দর্শকদের ভাল লেগেছে ঠিক তবে খুশিতে-মনের আনন্দে বাড়ী ফেরা হয়েছে বলে মনে হয়না…এটেষ্টের বড় পাওয়া বা চমক ছিলো তাইজুল এবং সাথে জুবায়ের হোসেন লিখনের উত্থান…তাইজুলের কীর্তি আজ ইতিহাসের পাঁতায় ঠাই করে নিয়েছে…ওদিকে জুবায়ের প্রথম ইনিংসে দু দুটো উইকেট নিয়ে নজড় কেড়েছেন…দ্বিতীয় ইনিংসে আর কি করে দেখাবেন,যা দেখানোর একাইত করে দেখিয়ে দিয়েছে তাইজুল…জুবায়ের বল করেন মাত্র ১ওভার…এই দুই তরুন স্পিনারই আমাদের আগামীর বড় তারকা হবেন বলাই যায়…তাই বোর্ড কর্তাদের উচিত এদুজনের দিকে বাড়তি নজড় দেয়া…সাকিবের প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটই ছিলো আলাদা ভাবে তুলে ধরার মত…বলব ব্যাটিংএ হতাশই করেছেন…তবে ব্যাটিংএ বড় হতাশার নাম ছিলো তামিম(৫+০)-শুভ(৮+০)-শুভাগত হোম(১৪+০)…মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ(৬৩+২৮) ও মুশফিক(৬৪+অপঃ২৩) ভাল ব্যাট করেছেন…তবে দুবারই রিয়াদের আউটের ধরনটা ছিলো হতাশার…অনেকদিন পর বল করে শাহদত তেমন খারাপ করেননি…দুবারই শুরুতেই উইকেট লাভ করেছেন…আল আমিন নাম মাত্রই খেলেছেন…প্রথম ইনিংসেই যা ৮ওভার বল করে উইকেট শুন্য ছিলেন…দ্বিতীয় ইনিংসে এক ওভারও বল করেননি…

…গ্যালারী ভরা দর্শক আর হতাশায় মগ্ন একজন…


* জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস-২৪০-(সিকান্দার রাজা  ৫১,টেলর ২৮,চিগুমবুড়া ২৯,আরভিন ৩৪,চাকাভা ২৫,সাকিব ৬/৫৯,জুবায়ের ২/৫৮,তাইজুল ১/৪২,শাহদত ১/৪৫)
*বাংলাদেশ ১ম ইনিংস-২৫৪-(মুমিনুল ৫৩,মাহমুদউল্লাহ ৬৩,মুশফিক ৬৪,তাইজুল ১৯,শুভাগত ১৪,তামিম ৫,শুভ ৮,সাকিব ৫,শাহদত ০,আল আমিন ৯,জুবায়ের অপঃ৭,পানিয়াঙ্গারা ৫/৫৯,কামুনগোজি ১/৫১,সিকান্দার রাজা ১/১২)
* জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস-১১৪-(সিবান্দা ১৪,চাকাভা ১০,সিকান্দার রাজা  ২৫,টেলর অপঃ ৪৫,আরভিন ১০,তাইজুল ৮/৩৯,সাকিব ১/৪৪,শাহদত ১/২৫)
*বাংলাদেশ ২য় ইনিংস-১০১/৭-(তামিম ০,শুভ ০,মুমিনুল ০,মাহমুদউল্লাহ ২৮,সাকিব ১৫,মুশফিক অপঃ ২৩,শুভাগত ০,তাইজুল অপঃ ১৫,শাহদত ১১,চিগুম্বুরা ৪/২১,পানিয়াঙ্গারা ২/৩০,চাতারা ১/৩৪)
* ম্যাচ সেরা-তাইজুল..

2 Responses to “..তাইজুলের নৈপূন্যেই নাটকীয় টেষ্ট জয়..”

  1. Saleque Sufi

    Oct 27. 2014

    Well written Kiron .Great analysis ,good suggestion . Keep doing your great work Kiron.

    Reply to this comment
  2. admin

    Oct 28. 2014

    sufi bhai..tnx for your comments..

    Reply to this comment

Leave a Reply to Anonymous