আশার আলো জ্বালিয়েও অন্দ্বকারে ডুবে গেলে সব
বাংলাদেশ প্রথম টেষ্টে জয়ের জন্য ২৪৫ রানের টার্গেট সামনে পেয়েও মাত্র ৭৭ রানের ব্যাবধানে হেরে যাওয়ায় মন খারাপের কারন হয়েছে ঠিক তবে হতাশ হবার কিছুই নেই…এটাকে হারা ভাবা ঠিক হবেনা..অনেক পাওয়া হয়েছে…প্রশংসা করতেই হয়…১১ মাস বিরতির পর টেষ্ট খেলতে নেমে সাড়ে পাঁচ শতাধিক রানের নজীড় গড়া হয়েছে..টেষ্টকে ৫ম দিনের শেষ প্রান্ত অবধি টেনে নেয়া হয়েছে…শতক এসেছে…অভিষেক টেষ্টেই ৬+৩=৯ উইকেট নেয়ার দৃষ্টান্ত গড়া হয়েছে…বড় দিক হলো কখনও বাংলাদেশ নেগেটিভ মনোভাব প্রদর্শন করেনি…
জয়ের নেশাতেই খেলে গেছে শেষ বিন্দু উজার করে…বলের আঘাতে মাথা নত করেনি..পরক্ষনেই ছক্কা হাকিয়ে দেখিয়েছে ভেঙ্গে পড়ার মত নই…ফাইট করে যাওয়া হয় নিজেদের সেরাটা ঢেলে দিয়ে…অনেকদিন পর এমন শক্ত অবস্থার মুখোমুখি হলে একটু খেই হারিয়ে ফেলাটাই স্বাভাবিক…এখানেই পরিপক্কতার অভাবটা…তবে এটা বলতেই হয় এ টেষ্ট ড্র হওয়াটাই ছিলো স্বাভাবিক…তাইত হারাটা অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না…তার পরও সাবাশ বলতেই হয়…
ক্রীড়া সাংবাদিক-লেখকরাও কতনা ব্যাস্থ ছিলেন একটা দিন…শেষ দিনের সকাল অবধি যেন ছিলো তাদের হাসি মাখা মুখ..দিনের শেষ লগ্নে এসে হলো মলিন…লেখা আর হলোনা যেন বীরোচিত এক জয়ের কাহিনী বা ফাইট করে ম্যাচ ড্র করার কাহিনী…লিখতেহলো হারের যন্ত্রনার কথা..
প্রথম টেষ্টে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে সফরকারী ওয়েষ্টইন্ডিজ দল ১৪৪ ওভার ব্যাট করে ৩ শতকের মাঝে ৪ উইকেটে ৫২৭ রান তুলে ইনিংস ঘোষনা করে…চন্দরপলের দায়িত্বশীল অপঃ ২০৩,পাওয়েলের ১১৭ ও রামদিনের অপঃ ১২৬ রান ছিলো তুলে ধরার মত..জীবনের প্রথম টেষ্টে বল হাতে নিয়েই সোহাগ গাজী নিজেকে তুলে ধরতে সক্সম হন..১৪৫ রানে ৩ উইকেট দখল করে নজড় কাড়েন..
জবাবে বাংলাদেশ বীরোচিত ব্যাটিং নৈপুন্য প্রদর্শন করে রান টপকে যায়নি শুধু প্রথম বারের মত ৫শতাধিক রান তোলার নজীড় গড়ে তোলে…নাঈমের ধর্য্য ও দায়িত্বশীল ব্যাটিং ছিলো আলাদা ভাবে তুলে ধরার মত..২৫৫ বলের মোকাবেলায় নাঈম অতুলোনীয় এক শতরান উপহার দেন..১৭টি দর্শনীয় বাউন্ডারি হাকিয়ে নাঈম ১০৮ রান সংগ্রহ করে সাজ ঘরে ফেরেন..এছাড়া তামিমের ৭১ বলে ৭২,সাকিবের ১৪৩ বলে ৮৯,নাসিরের ১৭৬ বলে ৯৬,রিয়াদের ১২০ বলে ৬২,মুসফিকের ৯৭ বলে ৪৩ ও নাফিসের ২৭ বলে ৩১ রান তুলে নজড় কাড়েন..রামপাল ও নারাইন ৩টি করে উইকেট দখল করেন..
এরপর যেন শুরু হয় বাংলাদেশ দলের হাসি মুখ নিয়ে মাঠে দাপট দেখানোর পালা..নুতন বোলিং অস্ত্র নবাগত সোহাগ গাজীর খুরধার স্পিন বোলিংয়ের সামনে অসহায় হয়ে এক এক করে ওয়েষ্টইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা বিদায় নিতে থাকে..এর পাশাপাশি জ্বলে উঠেন সাকিব ও রুবেলও…দ্বিতীয় ইনিংসে অসাধারন বোলিং নৈপুন্য প্রদর্শন করে গাজী তুলে নেন সর্বোচ ৬ উইকেট…জীবনের প্রথম টেষ্টেই ৯ উইকেট তুলে নিয়ে সোহাগ গাজী ইতিহাস হয়ে থাকলেন..সাকিব ও রুবেল দখল করেন দুটি করে উইকেট..এত করে ওয়েষ্টইন্ডিজ দল মাত্র ২৭৩ রানে অল আউট হয়ে যায়..পাওয়েল প্রথম ইনিংসের ন্যায় দ্বিতীয় ইনিংসেও শতরান(১১০) তুলে দারুন কৃতিত্ব দেখান..
জয়ের জন্য বাংলাদেশ দলের সামনে টার্গেট তখন মাত্র ২৪৪ রানের…আশার আলো দাও দাও করে জ্বলছে তখন..সবার চোঁখে মুখে হাসি-আনন্দের ঝলকানি..হাতে তখন প্রচুর ওভার..সহজ টার্গেট ছিলো সন্দেহ নেই..না জিতলেও ঠান্ডা মাথায় ধীরস্থির ভাবে দেখেশুনে ব্যাট করে গেলে ড্রটাও ছিলো হাতের নাগালে.. তবে সহজটাকে রীতিমত কঠিন করে তুলে ৭৭ রানে নত স্বীকার করে বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানরা যেন অগনিত ক্রিকেট প্রেমিকদের যন্ত্রনায় কাতর করে তোলেন..কারন এমনতর হারটা ছিলো সহজভাবে মেনে নেয়ার মত নয়..বড় হতাশার নাম তামিম-সাকিব..দলের বিশেষ প্রয়োজন মহুর্তে এদুজনের দায়িত্বহীন ব্যাটিং কারই কাম্য ছিলোনা..তামিম ৫ ও সাকিব ২ রান তুলে সাজ ঘরে ফিরে যান..স্বপ্নটা ওখানেই শেষ..সর্বোচ ২৯ রান তোলেন রিয়াদ..নাঈম দ্বিতীয় ইনিংসেও ধর্য্যরে পরিচয় দিয়ে সর্বোচ ৬৫ বল খেলে ২৬ রান তুলে কিছুটা দুভাগ্যজনক ভাবে এলবিডবøুর স্বীকার হয়ে বিদায় নেন…হতাশ করেন অন্যরাও…এর মাঝে জুনায়েদ ২০,নাফিস ২৩,মুসফিক ১৬,নাসির ২১,সোহাগ ১৯ রান তোলেন..শেষ দিকে নাটকীয় জয়ের নায়ক হয়ে ধরা দেন টিনো বেষ্ট…মাত্র ২৪ রানে ৫টি উইকেট দখল করে বাংলাদেশের ব্যাটিং এ চরম ধ্বস নামান বেষ্টই..এছারা রামপাল দুটি ও পারমল তিনটি উইকেট দখল করেন..
Recent Comments