…তারিকুজ্জামান মুনিরের ঐতিহাসিক প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরীর রের্কড…

১৯৮৫ মরসুমের জাতীয় ক্রীকেটের আসরে তারিকুজ্জামান মুনিরের ঐতিহাসিক ট্রিপল সেঞ্চুরী নিয়ে সে সময় “ক্রীড়াজগতে” আমার লেখার সার অংশ এখানে তুলে ধরা হলো…ডানের ছবিটা মুনিরের অফিসে আমারই তোলা..

ভাবতেই অবাক লাগে বাংলাদেশ ক্রীকেটের অনেক স্মরনীয় ইতিহাস আজও কিনা বর্তমান প্রজম্নের অনেকের কাছেই অজানা..জাতীয় পর্যায়ের আসরে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এসব রের্কড গুলো অবশ্যই সংগ্রহ করে তুলে ধরে রাখাটা দরকার..স্মরনীয় ইতিহাস বলে কথা..এইত কদিন আগে ক্রীকেট বোর্ড আইসিসি চ্যাম্পিয়ন দলকে বিশেষভাবে সম্মানিত করেছে..বলতেই হয় এটা ছিলো যেমন প্রশংসার তেমনি পীড়াদায়ক হলো ক্রীকেটের উজ্জল ইতিহাস গুলো আজও সংগ্রহে না রাখাটা..ব্যাপারটা দুঃখজনক বৈকি..আশাকরি বিলম্বে হলেও ক্রীকেট বোর্ড কর্তারা এদিকটায় একটুখানি সুনজর দেবেন..তাই যেন হয়..যা দেখার আশাতেই থাকলাম..

স্বাধীন বাংলাদেশের ক্রীকেটের জাতীয় পর্যায়ের মত বড় আসরে প্রথম শতরান,ডবল-ট্রিপল সেঞ্চুরী বা এক ম্যাচের উভয় ইনিংসে শতরান করার মত অসাধারন নজীড় গুলো যারা করেছিলেন তাদের সেসব দুর্লভ রের্কড গুলোর কথা আজকের কজনই বা জানেন..বড় করেই তুলে ধরার মত স্মরনীয় এসব রের্কড গুলোতো অজানা থেকে যাবার কথাও নয়..জানার প্রয়োজন অবশ্যই রয়েছে..এইত কদিন আগে হঠাৎ করেই ধানমন্ডি ৪ নম্বর খেলার মাঠে দেখা হয়েছিলো বাংলাদেশ ক্রীকেট দলের একসময়ের কৃতি স্পিনার সৈকতের সাথে..মজার ব্যাপার সৈকত ও জানায় কিরন ভাই আপনার সাইটে দেয়া লেখাটা পড়েই ভাল ভাবে জানা হলো জহির ভাইয়ের প্রথম শতরানের রের্কডের কথা..

আমার এই সাইটে এর আগে তুলে ধরেছিলাম প্রথম সেঞ্চুরীয়ান জহিরের কথা..আজ তুলে ধরব ২৭ বছর আগের প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরীর অতুলোনীয় কীর্তির কথা..যে রের্কডের সষ্ট্রা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাটোকায় কৃতি ব্যাটসম্যান তারিকুজ্জামান মুনির…

...ধানমন্ডি ক্রীকেট মাঠে ঐতিহাসিক প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরীর রের্কড গড়া সেই খেলায় ব্যাট করছেন তারিকুজ্জামান মুনির..অপর প্রান্তে ব্যাট হাতে দাড়িয়ে যেন মুনিরের এক একটি মনমাতানো শর্ট উপভোগ করেছেন আতাহার আলী..

…ধানমন্ডি ক্রীকেট মাঠে ঐতিহাসিক প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরীর রের্কড গড়া সেই খেলায় ব্যাট করছেন তারিকুজ্জামান মুনির..অপর প্রান্তে ব্যাট হাতে দাড়িয়ে যেন মুনিরের এক একটি মনমাতানো শর্ট উপভোগ করেছেন আতাহার আলী..

১৯৮৫ মরসুমের জাতীয় ক্রীকেটের আসরে তারিকুজ্জামান মুনির বাংলাদেশের ক্রীকেটে ঐতিহাসিক প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরীটি হাঁকিয়েছিলেন..চ্যাম্পিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে খেলে মুনির চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্বে একের পর এক মনমাতানো শর্ট খেলে তিন শতাধিক রান তুলে নিয়ে ইতিহাসের পাতায় নিজের নামটি লিখে রেখেছিলেন..এখেলায় চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বোলাররা যেন অসহায়ের মত বল করেই গেছেন আর মুনিরের বাহারী শর্ট গুলো উপভোগ করেছেন..রানের বন্যা বইয়ে দিয়ে মুনির একাই সেদিন তুলে নিয়েছিলেন সর্বোচ ৩০৮ রান…বলতে হয় ঠান্ডা মাথায় আস্থা,দৃঢ়তা আর চরম ধর্য্যরে পরিচয় দিয়ে দীর্ঘ ৫১০ মিনিট ব্যাট চালিয়ে মুনির তার রের্কড গড়া ট্রিপল সেঞ্চুরীটি করেন..যার মাঝে ছিলো দৃষ্টিনন্দন ৩২টি বাহারী বাউন্ডারির মার..

munir-0003মুনিরের ট্রিপল শতকের মাঝেই সেদিনের জাতীয় ক্রীকেটের তিন দিনের সেমী ফাইনাল খেলায় তিন তিনটি অতুলোনীয় ও স্মরনীয় রেকর্ডের জম্ন দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দল..যা কিনা ইতিহাসের পাতায় আজও জ্বল জ্বলে হয়ে আছে এবং থাকবে…এক : ৫ম ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাট হাতে মাঠে নেমে ৩০৮ রান তুলে মুনিরের ট্রিপল সেঞ্চুরীর রের্কড..সুব্রতের বলে সরাসরি বল্ড আউট হয়ে বিদায় নেন মুনির…দুই : মুনির ও আতহার আলীর ৫ম উইকেট জুটিতে রের্কড পরিমান সর্বোচ ৪১৭ রান সংগ্রহ। দীর্ঘ ৩৯৮ মিনিট ব্যাট করে আতহার হাঁকিয়েছিলেন দর্শনীয় ১৫৫ রান..মাসুমের বলে বল্ড হন আতাহার…তিন : ১৮২ ওভার খেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রের্কড সংখ্যক দলীয় সর্বোচ ৬৮৫ রানের পাহাড় গড়া..ফলে প্রথম ইনিংসে ৫৫৪ রানের বিশাল ব্যাধানে এগিয়ে থেকে ম্যাচ জিতে নিয়ে ফাইনালে উঠে যায় মুনিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দল..চট্রগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়ের ১ম ইনিংস মাত্র ১৪৪ রানেই গুড়িয়ে যায়..ব্যাটিংএ মুনিরের দাপটের পর ছিলো তারই বড় ভাই মিশার বোলিং দাপট..ঘুর্নি স্পিনে মিশা চরম ধ্বস নামায় চট্রগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়ের ইনিংস..মিশা ১৫ ওভারে মাত্র ২৭ রান দিয়ে দখল করেন সর্বোচ ৫ উইকেট..প্রিন্স নেন নেন ২৮ রানে ৩ উইকেট..সময় স্বল্পতার কারনে খেরার ২য় ইনিংস আর গড়ায়নি..

এরপর ফাইনালেও জ্বলে উঠেছিলেন খ্যাতিমান ব্যাটসম্যান মুনির..হাঁকান আবারও সেঞ্চুরী..৪২৬ মিনিট ব্যাট করে ৯টি দর্শনীয় বাউন্ডারীর মার মেরে করেন ফাইনালের সর্বোচ ১২৫ রান..টানা দুই ইনিংসে ৩০৮ ও ১২৫ রান ভাবাই যায় না..এ এক অসাধারন রের্কড হয়ে আছে আমাদের ক্রীকেট ইতিহাসে..যে স্মৃতি আজও ভোলার নয়..ফাইনালে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ৩৬৯ রানের জবাবে বরিশাল মাত্র ২৩৭ রানে অলআউট হলে তৃতীয় ও শেষদিন ২য় ইনিংস আর গড়ায়নি..ফলে প্রথম ইনিংসে ১৩২ রানে এগিয়ে থেকে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জয় করে নেয় দলনায়ক নেহালের ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় দল..ফাইনালে অনবদ্য ১১৬ রান করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার লাভ করেন নেহাল..

১৯৮৫ সালে সফরকারী শ্রীলংকার বিরুদ্বে খেলা বাংলাদেশ জাতীয় ক্রীকেট দল

১৯৮৫ সালে সফরকারী শ্রীলংকার বিরুদ্বে খেলা বাংলাদেশ জাতীয় ক্রীকেট দল

জাতীয় ক্রীকেটে অসাধারন ব্যাটিং করেই যেন নির্বাচকদের দৃষ্টি কাড়েন মুনির..ফলে বাংলাদেশ দলে যায়গা করে নেন মুনির..এসময় শ্রীলংকা দল ঢাকায় এলে জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগটিও সফল করে তোলেন মুনির..প্রথম ইনিংসে লিপুর সাথে মুনিরও সর্বোচ ৩৯ রান করার কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন..দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য মুনির মাত্র ৩রানে আউট হয়ে যান…কেন জানি এরপর আর নির্বাচকদের সুনজরে আসেননি মুনির..অপছন্দের তালিকায় চলে গিয়ে জাতীয় দলে আর খেলার সুযোগ পাননি!!!

….২৮ বছরের আগের আর বর্তমানের মুনির….

 

5 Responses to “…তারিকুজ্জামান মুনিরের ঐতিহাসিক প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরীর রের্কড…”

  1. sabbir

    Aug 20. 2012

    Bacchu-munir long time biman er successful opening pair chilo,but nat’l team e khub ekta call payni…novel,masum,liton,misa der vire borabor e onuccharito nam Munir…..SABBIR

    Reply to this comment
  2. sabbir

    Aug 20. 2012

    Expecting a special feature about Nehal hasnaine…

    Reply to this comment
    • admin

      Aug 20. 2012

      Dear Sabbir bhai tnx for your comments…yess Nehal ke niye lekhar ichhe amar o royeche..likhbo inshallah..darun stylish cricketer chilo nehal..munir bhaiyer sei record gorer shomoytay Nehal e chilo DU team er captain..final to chomotkar shotorun hakhiyechilo nehal & MOM chilo…

      Reply to this comment
  3. Zaki Uz Zaman (Sabbir)

    Sep 25. 2012

    Kiron: Tomake oshongkho dhonnobad 27-bocchor ager sriti tule anar jonno. Eki shonge tomake dhonnobad janai Zaheer Bhai-er upor lekha article-tir jonno. Zaheer Bhai Bangladesh-er cricket-e prothom shotorun (100) korecchilen, sheta aaj kojonei ba janen amader shomoer ebong amader senior cricket-er cchara. Ashchorjojonok holeo etai shotto je amra ei bishoi gulo khub gato othoba oggatoshare ariejai. Jar fole shothik thotto ebong itihash amra jante parina. Eta amader desh-e ottonto shabhabik ekta bisho, obak hobar moto kono kicchu na, tai amio obak hoi ni.

    Temonibhabe, Munir-er gora triple century shomporkeo eki kotha bola jae. Shei shomoe jara cricket khelecchen ebong jara niomito khela dekhten o cricket-ke follow korten, tader baire khub beshi manush pabe na jara ei triple century shomporke janen.

    Tomar nishchoi soron acche Altaf Bhai-er kotha. Unake ami Wari-te khelte dekhecchi. Shei Altaf Bhai-er kintu ekta record acche Bangladesh-er cricket-e. Uni shob-theke kom bol khele (49 bol) century korecchilen. Ami year ta mone korte parcchi na. Tomar kacche ei news thakar kotha. Unar ei 49-boler century thik tar kicchudin (same year-e) age Munir-er gora 51-boler century-r record-ti bhenge cchilo. Shob theke kom bol khele century kora Munir prothom cricketer, ja kina 1-shoptaher-o kom shomoe-er moddhe Altaf Bhai bhenge cchilen.

    Ami sure na BCB-te Zaheer Bhai, Munir, Altaf Bhai ecchara onno jara ei dhoroner record-er shathe jorito shegulo shongrokkhito acche kina. Jodi theke thake, tahole khub-i bhalo, aar jodi na theke thake shekhetre ami tomake ebong tomar moto jara cricket niye kaaj koren tara bibek-er moto kaaj korte paro.

    Lekaha-ta beshi boro houe gelo bole ami antorik bhabe khoma prarthi.

    Reply to this comment
    • admin

      Sep 26. 2012

      My dear Shabbir bhai tnx a lot for your nice comments..apnar lekhata pore khub e bhalo legeche…yess Altaf bhaiyer sei khelar paper cutting ta amar kache ache…ami likhbo ta tule dhore…asha kori bhalo lagbe…apnader sunddor comments amar ei kazer boro prerona…

      Reply to this comment

Leave a Reply to Professor Dr. Md. Golam Rabbani