”জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার” প্রাপ্ত ফুটবল ব্যক্তিত্ব অমলেশ সেন আর নেই

Amolesh-1

..আবাহনী ও জাতীয় দলের মাঝে অমলেশ সেনকে দেখা যাচ্ছে…

                                             …ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে ফুটবল অঙ্গনের সবারই প্রিয় পাত্র ভদ্র,নম্র,বিনয়ী ও অমায়ীক স্বভাবের অহংকারহীন একেবারে মাটির মানুষ ”জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার” প্রাপ্ত ফুটবল ব্যক্তিত্ব অমলেশ সেন আর নেই…জাতীয় দল-স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল-সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাহনী-মোহামেডানের মাঝ মাঠের কুশলী কারিগর ছিলেন সাবেক খ্যাতিমান ফুটবলার অমলেশ সেন…খেলা ছেড়ে কোচ হিসেবে জাতীয় দল ও ক্লাব ফুটবলে কোচিং করিয়েও খ্যাতি কুড়িয়েছিলেন অমলেশ…আজ ৭ই অক্টোবর রোজ শনিবার সন্ধায় ক্লাব তাবুতেই হঠাৎ করেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে সবাইকে কাদিয়ে চির বিদায় নিয়ে চলে গেছেন প্রিয় অমলেশদা…মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত নীরবে আপন মনে ফুটবলেরই সেবা করে গেছেন ‘৭৪ বছরের প্রচার বিমুখ এই মানুষটি…

Amolesh-2                                         …মাঝ মাঠের নিপুন শিল্পী অমলেশ সেন ছিলেন আবাহনীর একেবারে ঘরের ছেলে…অমলেশ সেন একটানা দীর্ঘ ৪০টি বছর কাটিয়ে দিয়েছিলেন আবাহনী ক্লাবেই…মৃত্যুর দিনটিতেও বিকেল বেলায় আবাহনী দলটাকে কোচিং করিয়েছেন…ক্লাব ঘরে ফিরেই শরীরটা ভালবোধ করছিলেন না বলে শুয়ে রেষ্ট নিতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন…কে জানত এই ছিলো তার শেষ ঘুম…ঘুমের মাঝেই এক পর্যায়ে হৃদ ক্রীয়া বন্ধ হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অমলেশ সেন…অমলেশ সেনের মৃত্যুর খবরে যেন আবাহনী ক্লাব ও গোটা ফুটবল অঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া…এইত কদিন আগে অল্প সময়ের ব্যবধানে হারানো হয়েছিলো আবাহনী ও জাতীয় দলের সাবেক তারকা গোলরক্ষক মোতালেব এবং আবাহনী ও সেই সাথে মোহামেডানের হয়ে খেলা এককালের খ্যাতনামা ষ্ট্রাইকার শামসু আর স্বাধীন বাংলা দল ও মোহামেডানের খ্যাতিমান ষ্টপার ব্যাক আইনুলকে…

Amolesh-3

…জাতীয় দলের ও আবাহনীর দুই সাবেক তারকা ফুটবলার আনোয়ার বাবুলের সাথে অমলেশ…

                                          …আমাদের ফুটবলের এক সময়ের মাঝ মাঠের দেশ সেরা নিপুণ কারিগরই ছিলেন অমলেশ সেন। ঠান্ডা মাথায় আক্রমন রচনা করতেন নৈপুন্যের ছোয়াতে। কুশলী ফুটবলার অমলেশ সেন ’৭৫ সালে জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে মালয়েশিয়ার মারদেকা আসরে খেলেন প্রথম বারের মত। তবে দুভার্গ্য ইনজুরীর কারনেই বারবার পিছিয়ে গেছেন এবং সেই কারনে জাতীয় দলে পরে আর খেলা হয়নি। এরমাঝে অবশ্য একবার ’৭৮ সালে ব্যাংকক এশিয়াডে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েও দলনায়ক জটিলতায় আবাহনীর ৭ ফুটবলার খেলা থেকে বিরত থাকার কারনে সে সুযোগও নষ্ট হয় অমলেশের। ঢাকা লীগ শুরু করেছিলেন অমলেশ ’৬২ সালে ফায়ার সার্ভিসের হয়ে। এরপর ইষ্টএ্যান্ডের হয়েও খেলেছেন। ’৭০ সালে খেলেন মোহামেডানের হয়ে। ’৭১-র যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে স্বাধীন বাংলা মুক্তিযোদ্ধা ফুটবল দলেও খেলেছেন। এরপর ’৭২ সাল হতে ’৮৪ সাল অবধি একটানা সুনামের সাথে খেলে গেছেন আবাহনীর হয়ে। জাতীয় ফুটবল প্রতিযোগিতায় ’৫৮ সাল থেকে প্রায় দুই যুগ ধরে খেলে গেছেন বগুড়ার হয়ে। তার নেতৃত্বে বগুড়া জেলা দল ’৬৯ সালে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো। খেলা ছেড়ে কোচিং পেশায় নিজেকে জড়ান অমলেশ সেন। দীর্ঘ দিন আবাহনীর সহকারী কোচ থেকে প্রধান কোচের দায়িত্বও পালন করেছেন দক্ষতার সাথে। মৃত্যুরআগ মুহূর্ত পর্যন্ত নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন আবাহনীর সাথে। অমলেশ সেন মাঝে ’৯২ থেকে ’৯৬ সাল অবধি মুক্তিযোদ্ধা দলেরও কোচ ছিলেন। এর বাইরে সেনা বাহিনী দলেরও কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন অভিজ্ঞ কোচ অমলেশ।

Amolesh-4

…প্রিয স্থান আবাহনী ক্লাব টেন্টে কাছের মানুষ দলের চেনা মুখ গুলোর সাথে এইত কদিন আগে অমলেশ সেন…বঁ হতে নাম্মি-অমলেশ-হারুনুর রশিদ-ববি-এলহাম-স্বপন-ববি-আনোয়ার-অমলেশ সেন…

No comments.

Leave a Reply