মোহামেডান ও আবাহনীর খেলা নিয়ে সেই আড্ডাটা আজ আর নেই…আজ আর নেই!!

picture5

…আজ হতে চল্লিশ বছর আগের মোহামেডান ও আবাহনীর খেলার দিনের মাঠ ভরা দর্শকের সেই মুহূর্ত গুলো স্মৃতির এ্যালবাম থেকে দেখলে মনটাই ভরে যায়…আর আজকের মোহামেডান ও আবাহনীর মর্যাদার লড়াইয়ের মাঠের হাল দেখলে বুকটা যেন হাহাবার করে উঠে…

…খেলা হবে মোহামেডান ও আবাহনীর আর উৎসবে মেতে থাকা হবেনা…চায়ের টেবিলে আলোচনার ঝড় আর উত্তেজনায় কথার লড়াই হবেনা…সাদা কালো আর আকাশী রংয়ের  বড় বড় পতাকা উড়ানোর প্রতিযোগিতায় নামা হবেনা…চির শক্রুকে হারানোর আনন্দ উল্লাস হবেনা…একটু আধটু সংঘর্ষ হবেনা…কিছু পটকা ফুটবেনা বা টিয়ার গ্যাসের ধোয়া খাওয়া হবেনা…পত্রিকা ম্যাগাচজনের পাতা জুরে নানা ষ্টোরী লেখা হবেনা…দুচারটে পত্রিকা-ম্যাগাজিন কিনে চোঁখ বুলানো হবেনা…খেলাটা নিয়ে ষ্টেডিয়াম পাড়া করতালি-চিৎকারের আওয়াজে গরম করে তোলা হবেনা…এসববিহীন দিন যেন একটা সময় ভাবাই যেতনা…আর দিনবদলের পালায় আজ ওসব কিনা প্রত্যাশা করারই কথা স্বপ্নেও ভাবা যায়না!!!..লেখাটা যখন লিখছিলাম তখনই ষ্টেডিয়াম থেকে এক বন্ধুর ফোন কল পেলাম…বল্লো মাঠে আসবেনা না?…দেখবেন না মর্যাদার লড়াই? আজ তো অপ্রত্যাশিতভাবে প্রচুর দর্শক সমাগম…বুঝতে দেরী হয়নি এটা তার চাপা ক্ষোভেরই রসিকতা ছাড়া কিছু নয়…মান্নাদের সেই বিখ্যাত “কফি হাউজের আড্ডাটা আজ আর নেই” গানের কলিটা কানে বাজছে ভিন্ন ভাবে”মোহামেডান-আবাহনীর খেলা নিয়ে আড্ডাটা আজ আর নেই..আজ আর নেই”…আড্ড তো দূরের কথা নেই কোন মাতামাতি-উম্মাদনা…দর্শকবিহীন মাঠে নিরবে খেলে ক্লাব টেন্টে ফিরেন ফুটবলাররা…ফুটবলের স্বর্নালী দিনে বড় ঐ দুদলের কেউ ছোট দলের সাথে এক পয়েন্ট হারালেই হলো রীতিমিত তোপের মুখে পড়তে হত খেলোয়াড় ও ক্লাব কর্তাদের…আর আজ বিশেষ করে সাদা কালোর ঐতিহ্যবাহী দলটির কর্তরাও সঠিক করে হয়ত বলতে পারবেনা শেষবার কবে লীগ শিরোপা জয় করা হয়েছিলো!!! ভাবতেও অবাক লাগে মোহামেডান শেষবার লীগ ট্রফি ঘরে তুলেছিলো আজ হতে ১৪ বছর আগে!!! আগে চ্যাম্পিয়নের ভাবনায় ডুবে থাকা হত আর এখন টিকে থাকার ভাবনা!!! স্বীকার না করে উপায় নেই ঢাকার ফুটবলে ট্রফির পর ট্রফি জয় করা ছাড়াও বিদেশ হতেও ট্রফি জয় করার মাঝে ফুটবলটাকে দারুন ভাবে মাতিয়ে রাখা মোহামেডান ওআবাহনী বড় এদুটো দলের শক্ত দল না গড়তে পারা এবং আজকের ক্রমাগত ব্যার্থতাই সেই ফুটবল আজ দিন দিন তার আকর্ষন হারিয়ে বসেছে…

0-msবলতেই হয় বড় ঐ দুটো দলের মধ্যকার স্নায়ুর লড়াইয়ের সেই দিনের আমেজ আর মাতামাতি আজ আর নেই ঠিক…তবুও ফুটবলের স্বর্ন যুগের মোহামেডান ও আবাহনীর টান টান উত্তেজনাকর মর্যাদার লড়াইয়ের কিছু উল্লেখযোগ্য দিক এখানে তুলে ধরলাম…যা হয়তবা অনেকেরই নুতন করে জানা হবে…বড় এই দুদল প্রথম মুখোমুখি হয়েছিলো ‘৭২ সালের লীগ আসরে…আর প্রথম লড়াইয়ে আবাহনী ২-০ গোলে হারিয়েছিলো শক্ত প্রতিদন্দি ঐতিহ্যকাহী দল মোহামেডানকে…গোল দুটি করেছিলেন অমলেশ ও সালাউদ্দিন…খেলাটির চলতি ধারাবিবরনী রেডিওতে প্রচার করা হয়েছিলো প্রথম…ফিরতি খেলায় হাফিজউদ্দিনের গোলে মোহামেডান ১-০ গোলে এগিয়ে থাকা অবস্থায় মারামারির সূত্র ধরে আবাহনীর খেলতে অপরাগতার কারনে খেলাটি পন্ড হয়ে যায়…

0-ma7

….১৯৭২ সালে মোহমেডান ও আবাহনীর প্রথম মুখোমুখির সেই লড়াই…ডানে কিপার কাশেমকে ছাকি দিয়ে সালাউদ্দিনের গোল…বামে দুদলের দ্বিতীয় দফার ম্যাচের মারামারি….

…স্বাধীন বাংলাদেশে সাদা কালো জার্সীর মোহামেডান দল প্রথম ট্রফি জয়ের স্বাদ নিয়েছিলো ‘৭২ সালের স্বাধীনতা দিবস ফুটবলে ইষ্টএন্ড ক্লাবকে ৩-১ গোলে হারিয়ে…২ গোল করে জয়ের মূল নায়কই ছিলেন কাজী সালাউদ্দিন…অপর গোলটি করেছিলেন আমিরুল…ইষ্টএন্ডের সাত্তার স্বান্তনাসূচক একটি গোল করেন…আর প্রথম লীগ শিরোপা জয়ের আনন্দ উপভোগ করেছিলো মোহামেডান ‘৭৫ সালে পিন্টুর নেতৃত্বে…যদিও মোহামেডান দল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আমলে ‘৫৭ সালে প্রথমবারের মত লীগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো…ওদিকে আবাহনী ক্রীড়া চক্র প্রথম ট্রফি জয়ের স্বাদ নিয়েছিলো ‘৭৪ সালে লীগে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শনের মাঝে…সেবারের সফল দলনায়ক ছিলেন সেই মোহামেডানের প্রথম ট্রফি জয়ের নায়ক কাজী সালাউদ্দিন…এদুদলের প্রথম দুই দলনায়ক ছিলেন মোহামেডানের পিন্টু ও আবাহনীর সাদেক(বর্তমান হকি ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক)…

mujib6

…১৯৭৪ সালের লীগ চ্যাম্পিয়ন আবাহনী দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের মাঝে জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান…

…লীগে মোহামেডানের স্মরনীয় কৃতিত্ব হলো অপরাজিত চ্যাম্পিয়নের হ্যাটট্রিকের গৌরব অর্জন…বাদল রায়,রনজিত ও ইলিয়াসের নেতৃত্বে ‘৮৬ হতে ‘৮৮ সাল টানা ৩ বছর লীগে শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়েছিলো মোহামেডান দল…অপরদিকে আবাহনী অবশ্য প্রথম বারের মত হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নের অনন্য নজীড় গড়েঠিলো ‘৮৩ হতে ‘৮৫ নাল টারা ৩ মরসুমে লীগ শিরোপা জয়ের মাঝে…৩ সফল দলনায়ক ছিলেন আশিষ ভদ্র, টুটুল ও জনি…

msc champion 75-…বড় এই দুদলের মাঝে ঢাকা লীগে ৩ জন ষ্ট্রাইকার সর্বাধিক বার সর্বোচ্চ গোল করার অসাধারন নজীড় গড়তে সক্ষম হন…এতিন খ্যাতিমান ষ্ট্রাইকার হলেন আবাহনীর সালাউদ্দিন ও আসলাম এবং মোহামেডান-মুক্তিযোদ্ধার নকিব…এতিনজনের মাঝে অবশ্য কুশলী গোলদাতা আসলাম অসাধারন দক্ষতায় লীগে টানা ৪বার সহ রের্কড সংখ্যক সর্বাধিক ৫বার ছিলেন ঢাকা লীগের সর্বাচ্চ গোলদাতা…’১৯৮৪-’৮৫-’৮৬-’’৮৭ এবং ’৮৯ সালে আসলাম যথাক্রমে ১৭-১৮-২০-১৪ ও ১১ গোল করে সর্বাচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন…সালাউদ্দিন ১৯৭৩-’৭৭-’৭৯ ও ‘৮০ সালে যথাক্রমে ২৪-১৪-১৪ ও ১৫ গোল করে  সর্বোচ্চ গোলদাতা হযেছিলেন…অপরদিকে নকিব ১৯৯৫-৯৬-৯৭ ও ৯৮/৯৯ সালে টানা ৪বার সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে কৃতিত্ব দেখান…নকিব এচার বছরে করেন ১২-১৪-১৩-১৩ গোল…

0-ma8

………..সালাউদ্দিন…….আসলাম……..নকিব…………

…সাদা কালো   ও আকাশী জার্সী গায়ে জড়িয়ে খেলে লীগে প্রথম সর্বোচ্চ গোলদাতার খাতায় নাম ণিখিয়েছিলেন মোহামেডানের নওশের ও আবাহনীর সালাউদ্দিন…এরমাঝে সালাউদ্দিন ‘৭৩ সালে ২৪ গোল করে এবং নওশের ‘৭৫ সালে ২১ গোল করে লীগের সর্বোচ্চ গোলদাতার গৌরব লাভ করেন…এছাড়া এক মরসুমে রের্কড গড়া সর্বাধিক ২৭ গোলের মালিক আজও খ্যাতিমান ষ্ট্রাইকার সালাম মুর্শেদী…যে রের্কড ভাঙ্গা হয়নি কারো…মজার ব্যাপার হলো এই দুই দলের হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিক করার অনন্য কৃতিত্ব দেখান আবাহনী খ্যাত কাজী সালাউদ্দিন…সাদা কালো জার্সীতে সালাউদ্দিন ‘’৭২ সালের স্বাধীনতা দিবস ফুটবলের সেমি ফাইনালে শক্তিশালী বিজেআইসির বিরুদ্ধে চমকপ্রদ হ্যাটট্রিকটি করেছিলেন…অপর দিকে আবাহনীর হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিকটি করেছিলেন সালাউদ্দিন ‘৭৩ সালের লীগ ম্যাচে দিলখুশার বিরুদ্ধে…সেই খেলায় সালাউদ্দিন একাই করেছিলেন রের্কড সংখ্যক সর্বাধিক ৭ গোল…৭ গোলের মাঝে তুখোর ষ্ট্রাইকার সালাউদ্দিন ঢাকা ফুটবল লীগে প্রথম ডবল হ্যাটট্রিক করার অনন্য কৃতিত্ব দেখান…সে খেলায় আবাহনী জয পেয়েছিলো ১০-০ গোলে…ঠিক তার কম্যাচ বাদেই সাদা কালো জার্সীতে মোহামেডানের কুশলী ষ্ট্রাইকার মেজর হাফিজউদ্দিনও ডবল হ্যাটট্রিক করে দারুন  কৃতিত্ব দেখান ফায়ার সার্ভিসের বিরুদ্ধে…মোহামেডান সেই খেলায় ৬-১ গোলে হারিয়েছিলো ফায়ার সার্ভিস দলকে…লীগ আসরে হাফিজিউদ্দিনই প্রথম মোহামেডানের হয়ে হ্যাটট্রিক করেছিলেন…যা ছিলো ‘৭৩ সালের লীগে ‍দিলখুশার বিরুদ্ধে…এখানে তুলে ধরার মতই মজার ব্যাপার হলো দুই ডবল হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্বের অধিকারী খ্যাতিমান ষ্ট্রাইকার সালাউদ্দিন ও হাফিজউদ্দিন পরবর্তী সময়ে বাফুফের সভাপতি ছিলেন…

picture1

…….সালাউদ্দিন……..হাফিজউদ্দিন……….সালাম মুর্শেদী……..

…আবাহনী ও মোহামেডানের খেলা হলেই চারটি ঘটনার কথা যেন ঘুরে ফিরে আসবেই…যার একটি হলো ১৯৮২ সালে মাঠের মারামারি ঘটনার সূত্র ধরে বড় রকমের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে আবাহনীর জাতীয় দরের ৪ খ্যাতিমান তারকা ফুটবলারের জেলে যাওয়া…সেই কলন্কিত খেলায় এক পর্যায়ে ঢাকা ষ্টেডিয়াম যেন হাঙ্গামা আর মারামারিতে যুদ্ধের রনক্ষেত্র পরিনত হয়েছিলো…রাত্রে আবাহনীর শ্রীলংকান পাকীর আলী-প্রেম লাল সহ প্রায় সকল খেলোয়াড়কে রমনা থানায় ধরে সিয়ে যাওয়া হয়েছিলো…অপর ঘটনাটি ছিলো ১৯৮৭ সালে…শিরোপা নির্ধারনী প্লে অফ ম্যাচে অনেকটা পরিকণ্পনা করেই যেন ম্যাচটা সমতা রেখে নিজেরাই যুগ্ম চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মেতে উঠেছিলো দুদল…পরে ব্যাপারটা অনেকদূর গড়ায়…এমনকি মোহামেডান ও আবাহনীর দুই দলনায়ক রনজিত ও আসলাম সহ একাধিক ফুটবলারকে সাজা ভোগ করতে হয় মাঠের বাইরে বসে থেকে…শুধু তাই নয় সবাইকে অবাক করেই শিরোপা নির্ধারনী ম্যাচটি পরে আর্মী ষ্টেডিয়ামে দর্শকবিহীন আয়োজন করা হয়েছিলো…এছাড়া দু দুটো মর্মান্তিক ঘটনার কথা আজও অনেকেরই মনে দাগ কেটে আছে সন্দেহ নেই…যে দুঘটনায় প্রান হারাতে হয়েছিলো ৩ নিরীহ সমর্থককে…মোহামেডানে ও আবাহনীর খেলা নিয়ে কলন্কময় রনক্ষেত্রে ১৯৮০ ও ১৯৮৫ সালে প্রান হায়েছিলো ওরা ৩জন…

picture2…মোহামেডান ও আবাহনী এ বড় দুদলের আরো দুএকটি দিক এখানে না  তুলে ধরলেই নয়…মোহামেডানের এক সময়ের খ্যাতিমান ষ্টপার ব্যাক জাকারিয়া পিন্টু দুদলের মাঝে সর্বাধিক রের্কড টানা ৪ বার দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ১৯৭২ সাল হতে ‘৭৫ সাল অবধি…যার মাঝে ‘৭৫ সালে পিন্টু একবার নিয়েছিলেন লীগ চ্যাম্পিনের স্বাদ…ওদিকে আবাহনীর তারকা ব্যাক মোনেম মুন্না ‘৯৪ ও ‘৯৫ সালে টানা দুই বছর দলনায়ক হিসেবে নিয়েছেন লীগ শিরোপা জয়ের স্বাদ…

picture3

….আবাহনী ও মোহামেডানের দুই খ্যাতিমান ব্যাক ও সফল দলনায়ক মোনেম মুন্না এবং জাকারিয়া পিন্টু…..

 …মোহামেডান ও আবাহনী এদুদলের মাঝে ঢাকা লীগে প্রথম বিদেশি ফুটবলার দলভুক্ত করে খেলিয়েছিলো মোহামেডান দল…আর প্রথম বিদেশি কোচ এনছিলো আবাহনী দল…মোহামেডান ‘৭৪ সালে ভারতের প্রভাকর মিশ্র ও শ্রীপ্রসাদকে দলে টেনেও আবাহনীর বিরুদ্ধে হার এড়িয়ে সাফল্যের দেখা পায়নি…এমনকি সুপার লীগেও উঠতে ব্যার্থ হয়েছিলো…ওদিকে আবাহনী ‘৭৩সালে প্রথম বিদেশি কোচ উইলিয়াম হার্টকে নিয়ে এসে দল গড়েছিলো…আরআবাহনী দলটি ‘৭৭ সালে প্রথম বিদেশী ফুটবলার খেলিয়েছিলো শ্রীলংকার ষ্ট্রাইকার মহেন্দ্র পালাকে…দারুন সফলও ছিলো দলটি মহেন্দ্র পালাকে দলভুক্ত করে…শিরোপা নির্ধারনী গুরুত্বপূর্ন খেলায় মহেন্দ্র পালার একমাত্র গোলই ‘৭৭ সালে আবাহনী ১-০ গোলে মোহামেডানকে হারিয়ে লীগ শিরোপা ঘরে তুলে নিয়েছিলো…

picture4

…বামে ‘৭৪ সালে মোহামেডানের হয়ে খেলা কলকাতার দুই খেলোয়াড় শ্রীপ্রসাদ ও প্রভাকর মিশ্র…মাঝে চোঁখ জুড়ানো এক দৃশ্য-মোহামেডান ও আবাহনীর খেলায় গ্যালারী শুধু নয় পাশের বিল্ডিংও ভরে যায় দর্শকে…ডানে আবাহনীর চ্যাম্পিয়নের নায়ক গোলদাতা লংকান মহেন্দ্রপালা…

No comments.

Leave a Reply to Anonymous