ক্রীড়াঙ্গনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিবার

all-…বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ ফুটবল এলেই মনে পড়ে আর স্মৃতির এ্যালবামে ভেসে উঠে ক্রীড়া প্রেমী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিবারের খেলার জগতের অনেক স্মরনীয় সাফল্যের স্মৃতি গুলো…বলতেই হয় খেলাধূলার প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গোটা পরিবারেরই ছিলো অন্যরকম এক দুর্বলতা-মায়ার টান ও গভীর ভালবাসা…ক্রীড়াবিদ শেখ মুজিবুর রহমান-শেখ কামাল-শেখ জামালের খেলার মাঠের কাহিনী গুলোত আজকের অনেকেরই কাছে একেবারেই অজানা…শুনলে গল্পের মতই মনে হবে…কারন আর কিছুই নয় সে সব স্মৃতি গুলো তেমন ভাবে ছবি সহকারে তুলে ধরাও হয়নি…খেলার মাঠের সেই দুর্লভ স্মৃতি সমূহ আমি আমার সংগ্রহশালায় স্বযত্নে ধরে রেখেছি দীর্ঘ ৪ দশকেরও বেশী সময় ধরে…তবে দূর্ভাগ্য বা হতাশাজনক দিক হলো কারো সহযোগীতা না পাওয়ায় এসব দুর্লভ স্মৃতি সমূহ নিয়ে কিছু করাত দূরের কথা একটা প্রদর্শনীরও আয়োজন করো সম্ভব হয়ে উঠেনি…তবে আশায় আছি আগামীতে কোন এক সময়ে কারো সহযোগীতায় কিছু একটা করার…যা করতে পারলে বর্তমান প্রজন্ম অনেক অজানা তথ্য দেখতে ও জানতে পারত ভাল করেই…

MUJIB-banner-উপরের এই ছবিতে এক ফ্রেমে ”ক্রীড়াঙ্গনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পরিবার” এই ব্যানোরে খেলার জগতের অনেক দুর্লভ মহুর্ত ধরে রাখা হয়েছে…এখানে স্মরনযোগ্য যে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ফুটবলের প্রতি দুর্বলতা ছিলো বেশীরকম…খেলতেনও ফুটবল…পঞ্চাশ দশকে ঢাকার ফুটবলে  ওয়ান্ডার্রাস ক্লাব ছিলো শীর্ষস্থানীয় জনপ্রিয় এক দল…আর এ ক্লাবের কর্নধার ওয়াজেদ আলীর সাথে নাকি শেখ মুজিবুর রহমানের ছিলো দারুন সখ্যতা…সেই সুসম্পর্কের টানেই যেন শেখ মুজিবুর রহমান সে সময়ের শক্তিশালী দল ওয়ন্ডারর্সের সাদা কালো জার্সী গায়ে জড়িয়ে খেলেছিলেন…স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার প্রধান হবার পর যখনই ডাক পেতেন সময় বের করে ঠিকই ছুটে গেছেন খেলার মাঠে খেলোয়াড়দের প্রেরনা জুগাতে…এমনকি জাতীয় দল যখনই বাইরে খেলতে যেত তখন বঙ্গভবনে দলকে ডেকে নিয়ে সংম্বর্ধনা জানাতেন বাড়তি উৎসাহ দেবার জন্য…

z2-…মনে পড়ে ’৭২ সালে প্রথম যখন কলকাতার শক্তিধর মোহনবাগান দল ঢাকায় খেলতে আসে তখন প্রধান অতিথি হিসাবে মাঠে গিয়েছিলেন শেখ মুজিব…সে সময় ঢাকা একাদশের খেলোয়াড়দের সাথে পরিচয়ের পর্বে শেখ মুজিবুর রহমান খেলোয়াড়দের গম্ভীর ও সিরিয়াস মুখ দেখে বলেছিলেন কিরে তোদের এমন সিরিয়াস ও শুকনো দেখাচ্ছে কেন…এসব ঝেড়ে ফেলে তোরা হাস’ত সবাই আর হেসে উদ্যম নে…বঙ্গবন্ধুর ওমন কথায় দারুন ভাবে উজ্জিবিত হয়ে উঠেছিলো  সেদিন ফুটবলাররা…তাই শুধু নয় সে খেলায় দারুন ভাবে জ্বলে উঠে মন মাতানো খেলা উপহার দেয়ার মাঝেই কৃতি ষ্ট্রাইকার সালাউদ্দিনের দেয়া একমাত্র গোলে জয়ের স্বাদও নিয়েছিলো…সাবাধীনতার পর ঢাকা মাঠে প্রথম ফুটবল মাঠে গড়িয়েছিলো বঙ্গবন্ধু একাদশ ও রাষ্ট্রপতি একাদশ দলের প্রীতি ফুটবল ম্যাচের মধ্য দিয়ে…সেদিনও জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান মাঠে উপস্থিত ছিলেন…ঐতিহাসিক স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সবাইকে নিয়ে গড়া হয়েছিলো বঙ্গবন্ধু একাদশ আর বাছাইকৃতদের নিয়ে রাষ্ট্রপ্রতি একাদশ দল…খেলায় রাষ্ট্রপ্রতি আবু সাঈদ চৌধুরীর দল জয় পেয়েছিলো ২-০ গোলে…গোল দুটো করেছিলেন টিপু ও গফুর…

Z…জাতির জনকের বড় ছেলে শেখ কামাল ছিলেন অসাধারন প্রতিভার চৌকস এক ক্রীড়া ব্যাক্তিত্ব…অনেক খেলাতেই তার ছিলো দীপ্ত পদচারনা…খেলার পাশাপাশি সংগঠক হিসাবেও দক্ষতার পরিচয় দিয়ে খ্যাতিও কুড়িয়েছিলেন…তারই হাতে গড়া দেশের সেরা ক্লাবের একটি আবাহনী দল…শেখ কামাল একাধারে ক্রিকেট-ফুটবল-বাস্কেটবল-ব্যাডমিন্টন ও এ্যাথলেটিকস এপাঁচ খেলাতেই পারদর্শি ছিলেন…’৭৫ সালে ঢাকার ক্রিকেট লীগ চ্যাম্পিয়ন নিজ দল আবাহনীর নিয়মিত ও অপরিহার্য্য ওপেনিং বোলার ছিলেন শেখ কামাল…সেই ‘৭৫ সালেই ঢাকার বাস্কেটবল লীগ চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ওয়ান্ডার্রাস ক্লাবের হয়ে খেলেও নৈপূন্য দেখিয়েছেন শেখ কামাল…এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ফুটবলও খেলেছেন…এস.এম হলের বার্ষিক ক্রীড়ায় ১০০ মিঃ দৌড়ে চ্যাম্পিয়নও হয়েছিলেন শেখ কামাল…শুধু কি তাই হলের ব্যাডমিন্টনের ডাবলসেও চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জয় করে কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন শেখ কামাল…আবাহনী ক্লাবের প্রতিষ্টাতা হিসাবে নিপুনতার সাখে সাংগঠনিক দক্ষতার সাক্ষর রেখে দলকে ক্রিকেট-হকি ও ফুটবলে লীগ চ্যাম্পিয়নের শিরোপা এনে দিয়ে খ্যাতিও কুড়ান…শেখ কামাল সে সময় খেলোয়াড় সমিতির সভাপতিও ছিলেন…বলা যায় শেখ কামালই যেন ছিলেন আধুনিক ফুটবলের জনক…আবাহনীর জন্য ‘৭৪ সালে প্রথমবারের মত বিদেশী কোচ বিল হার্টকে এনে এদেশের ফুটবলে আধুনিকতার ছোয়া লাগান…সে বছর আবাহনী লীগ শিরোপা জয় করেছিলো…এবং পরে ভারতেও খেলতে গিয়েছিলো…মনে পড়ে বঙ্গবন্ধু সে সময় আবাহনীর ফুটবল দলের ভারত সফরের আগে গোটা দলকে বঙ্গভবনে ডেকে নিয়ে উৎসাহিত করেছিলেন…তেমনি ভাবে ‘৭৫ সালে আবাহনী যেবার প্রথম ক্রিকেট লীগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো তখনও বঙ্গবন্ধু দলের সবাইকে ডেকে নিয়েছিলেন বঙ্গভবনে…উলেখ্য যে শেখ কামালের সহ-ধর্মীনি সুলতানা আহমেদ ছিলেন সে সময়ের দেশ সেরা মহিলা এ্যাথলেট…ছিলেন লং জাম্প ও দৌড়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা ব্লু ধারী ক্রীড়াবিদ…দেশের বাইরে ভারতে গিয়েও রের্কড গড়ার মাঝে স্বর্ন পদকও জয় করে কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন…

z4…ওদিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেঝ ছেলে শেখ জামালের দুর্বলতা ছিলো ফুটবল ও ক্রিকেট খেলায়…এই দুই খেলাতেই অংশ নিয়েছেন শেখ জামাল…আবাহনীর ফুটবল জার্সীও গায়ে জড়িয়ে ছিলেন শেখ জামাল…খেলতেন রক্ষনভাগে…আজাদ স্পোটিংয়ের হয়ে ঢাকা ফুটবল লীগও খেলেছেন শেখ জামাল…এছাড়া ক্লাব ভিত্তিক ক্রিকেটও খেলেছেন নিয়মিত…শেখ জামাল একাদশ নামে একটা দলও ছিলো…এদলে খেলেওছেন শেখ জামাল…স্বাধীনতাত্তোর প্রথম তোফাজ্জল স্মৃতি ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়নও হয়েছিলো শেখ জামাল একাদশ দলটি…জাতির জনক শেখ মুজিবর রহমানের আদরের ছোট ছেলে শেখ রাসেলেরও বাবা ও বড় ভাইদের মতই যেন খেলার প্রতি টান ছিলো ভিষন…খুব ছোট ছিলো বলে শেখ রাসেলের ওভাবে খেলায় মেতে থাকা হয়নি তবে বাবার সাথে মাঠে ছুটে যেত খেলা দেখার জন্য…মনে পড়ে আর আজও চোঁখে ভাসে ‘৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ঢাকা ষ্টেডিয়ামের ভিআইপিতে বসে শেখ রাসেলের খেলা দেখার সেই মহুর্ত…সেবার রাশিয়ার মিন্সক ডায়নামো দল এসেছিলো প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে…ঢাকা ষ্টেডিয়ামে রাশিয়ান দলটি মুখোমুখি হয়েছিলো ঢাকা একাদশের সাথে…বাবার সাথে বসে পুরো খেলাই আনন্দের মাঝে উপভোগ করেছিলো শিশু রাসেল…

z3-বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য বড় সন্তান আজকের সরকার প্রধান মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনারও বাবার মতই যেন খেলাধূলার প্রতি দুর্বলতাটা যেন ভিষন রকম…খেলাধুলাটা তার করা হয়নি তেমন তবে আজও ছেলে জয়ের সাথে নিজ বাড়ীর আঙ্গিনায় সময় পেলে ব্যাডসিন্টন খেলায় মেতে উঠেন…প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা শত ব্যাস্ততার মাঝেও ডাক এলেই মিস করেননা মাঠে ছুটে গিয়ে খেলা উপভোগ করতে…মাঠে বসে জাতীয় দলের খেলা দেখা শুধু নয় দল সাফল্য পেলে বঙ্গভবনে ডেকে নিয়ে সংম্বর্ধনা দেয়ার মাঝে বিশেস পুরস্কারে ভূষিত করে খেলোয়াড়দের দারুন ভাবে অনুপ্রানিতও করেন…ঠিক যেমনটা করতেন তার বাবা প্রধান মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান…প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র ছেলে জয়ের মাঝেও যে নানা-মামাদের মত খেলাধূলার প্রতি টান রয়েছে তা বলতেই হয়…মায়ের সাথে খেলার মাঠেও যান সুযোগ পেলে…অবসরে মায়ের সাথে মাঝে মাঝে ব্যাডমিন্টন খেলায়ও মেতে থাকেন…আমাদের দেশের সরকার প্রধানের খেলার প্রতি এমনতর ভালবাসার টান ক্রীড়াবিদদের যে ভাল খেলার ব্যাপারে বাড়তি প্রেরনা ও সাহস জুগায় তা না বল্লেই নয়…এটা আমাদের ক্রীড়াবিদদের কাছে বড় পাওয়া বলতেই হয়…

Z5

বিশ্বসেরা ক্রিকেটার টেন্ডুলকারের সাথে ছেলে জয় ও মেয়ে পুতুল এবং বোন রেহানা সহ স্বপরিবারে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা…ডানে বিশ্ব সেরা অল রাউন্ডার সাকিবের সাথে বঙ্গবন্ধু নাতি ও প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র ছেলে জয়কে দেখা যাচ্ছে

No comments.

Leave a Reply