আজ হয়নিত কি-একদিন টেষ্টে জেগে উঠবেই টাইগাররা

111000-gসময়টা ২০০০ সাল আমরা সদ্য টেস্ট খেলা শুরু করেছি। ওসময়টায় বলতেই হয় আমাদের প্রত্যাশা বড় কিছু ছিল না।শুধু লড়াই করে একটুখানি ভালো খেলা খেলতে পারলেই হলো। আর যদি লড়াইয়ের মাঝে টেষ্টকে ৫দিনে টেনে নেয়া যায় তাহলে মন্দ না।যা হবে বাড়তি প্রেরনা।

দিন গড়ানোর মাঝে এখন যেন সময়টা অনেক বদলেছে, পেরিয়ে এসেছি অনেকটা পথ।বদলেছে আমাদের খেলার ধরণ, পরিবর্তন এসেছে আমাদের শরীরী ভাষায়,মানোসিকতায়। আমরা এখন বিশেষ করে সীমিত ওভারের খেলায় ভালই শিখে নিয়েছি জয় কিভাবে ছিনিয়ে নিতে হয়।বিজয় মিছিল কিভাবে করতে হয়। জয় আসছে এখন ধারাবাহিক ভাবে।বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার এখন আমাদেরই গ্রেট সাকিব।আছে বিশ্ব ক্রিকেটে প্রতিষ্টিত ও উঠতি তারকা খ্যাতি পাওয়া তামিম-মুশফিক-মাশরাফি-ইমরুল-রুবেল-শাব্বীর-নাসির-তাইজুল-তাসকিন-সৌম্যর মত ক্রিকেটার।

তবে এখানে না বলে পারছিনা টেস্ট আর ওয়ানডে যে সম্পূর্ণ ভিন্ন মেজাজের খেলা তা বোঝার মানোসিকতায় যেন একটু ঘাটতি রয়েই যায়।পাকিস্তানের সাথে টেষ্ট ম্যাচেও তা ফুটে উঠেছে ভাল করে।কম টেষ্ট খেলাও এর একটা কারন।৫০ ওভারের খেলায় যদি ৬ ঘণ্টা ভালো খেলা যায় তাহলে ফলাফল মুঠোয় রাখা যায়। তবে টেষ্টে ৫ দিনই ভালো খেলতে হবে।এখানে প্রতি ঘন্টায়ই যেন টেষ্ট দিতে হয়।আর এ জন্য শারীরিক মানুষিক শক্তি-ফিটনেস বড় ব্যাপার হয়ে দাড়ায়।অধর্য্য হলে চলবেনা।সজাগ থাকতে হয় প্রতিক্ষনেই। প্রতি দিনই এখানে নতুন করে যাত্রা শুরু করতে হয় নয়া ভাবনায়। প্রতিটি সেশনই ভালো খেলার বিকল্প যেন নেই।1aএবার যেন পাকিস্তান কে ওডিআই, টি২০ তে পরাজিত করে ভুলেই যাওয়া হয় টেষ্ট খেলার ভিন্ন মেজাজের কথা, হয়তো ভাবা হয় ধর মার কাট করেই হয়ত পার পেয়ে যাব। পেয়ে গিয়েছিলামও প্রথম টেস্ট ড্র করে। তখনো আমাদের টিম সিলেকশন নিয়ে কথা উঠেছিলো ।ভাগ্যিস ম্যাচ ড্র হওয়াতে দুর্বল দিক গুলো তেমনটা নজর কাড়েনি। কিন্তু ২য় টেষ্টে অসহায় ভাবে হারের পর এখন খুব বাঝে ভাবেই চোখে লাগছে বিষয় গুলো।ঢাকা টেষ্টে ব্যাটসম্যানদের অধর্য্য হয়ে অহেতুক বাইরের বল খেলতে যেয়ে নিজোরই আউট হয়ে দলকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে ফিরেছেন।এর পেছনে অবাক করা ভাবে টসে জিতে আগে ফিল্ডিং নেয়াকেও অনেকেই বড় কারন হিসেবে দেখছেন।প্রচন্ড গরমে দুদিন ছুটাছুটি করে ফিল্ডিং করে যেমন ক্লান্ত হয়ে পড়েন ক্রিকেটাররা তেমনি বিশাল রানের চাপে পড়ে মনোবল যেন হারিয়ে ফেলেন।যা থেকে আর কোমড় সোজা করে ঘুরে দাড়ানো সম্ভব হয়ে উঠেনি।

আনামুল বিজয়, নাসির,গাজী, শফিউল, মার্শালদের উপেক্ষা করে দলে সুযোগ দেয়া হয়েছে সৌম্য, শহীদ, শুভগতদের।আমি এর আগেও বলেছি এখনো বলছি সৌম্য টেস্ট এ ভালো করবে কিন্তু সময় এখন নয়,আরো কিছুদিন পর।শুভগত এমন কিছু করেনি যে তাকে খেলাতেই হবে। আর রিস্ক নিয়ে হুট করে শহীদকে খেলানো হলো।শাহদত দুবলেই মাঠের বাইরে ইনজুরিতে পড়ে।তবে উপেক্ষা করা হলো অভিজ্ঞ শফিউল-রাজু এবং আল আমিনকে।

11bbতেমনি এবারের ক্রিকেট মরসুমে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা হাজারের ও বেশী রান করা রনি বা লিটনও থাকলেন অবহেলার তালিকায়।ভাল খেলার পরও অভিজ্ঞ নাঈমকেত ছুড়েই ফেলা হয়েছে অনেক আগেই।আমাদের লিগ খেলা গুলোই হচ্ছে খেলোয়াড় বের করে আনার জায়গা।কেউ যখন এখানে সেরা পারর্ফম করেও দলে সুযোগ পাবে না,তখন তার মনোবল হারিয়ে ফেলাটাই স্বাভাবিক।আমাদের প্রতিভাগুলো এভাবেই হারিয়ে যায়। গেছে হারিয়ে শাহরিয়ার নাফিস, এনামুল, কাপালি, আফতাব, তালহাদের মত প্রতিভারা।

বলব একজন লেগ স্পিনার সব সময়ই টেষ্ট দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়,ম্যাচ অনেক সময় তারাই ঘুরিয়ে দিতে পারেন যে কোন সময় জ্বলে উঠে।আমাদের তেমন কোন নামি দামি লেগ স্পিনার নেই কিন্তু তৈরি করে নেয়ারও আগ্রহ লক্ষ করা যায়না। জুবায়ের লিখন আমাদের অন্ধকারে আশার আলো হয়ে আশা একজন প্রতিভাবান লেগ স্পিনার।অথচ তাকেও অবহেলায় দুরে ঠেলে দেয়া হলো।তাকে সুযোগ দিলে যে খারাপ হতোনা তা যেন পাক ইয়াসিরই ভাল বল করে বলে দিয়ে গেলেন।জুবায়েরকে ক্ষমতা প্রমানের সুযোগ করে দিলে মন্দ হত বলে মনে হয়না।তাছাড়া গত সিরিজে তরুন জুবায়ের এমন কোন খারাপ খেলেনি যাতে করে তাকে দলে রাখা বা খেলানো যাবে না।পাক লেগ স্পিনার ইয়াসিরের সাফল্য দেখে বার বারই জুবায়ের এর অভাবটা যেন ফুটে উঠেছে।

11aaবলতেই হয় কিছু বিষয় সর্তক থাকলে হয়ত ঢাকা টেষ্টের ফলাফল ভিন্ন হলেও হতে পারত। টিম মেনেজমেণ্ট হয়ত ২য় টেষ্টের ভুল গুলো বুঝতে পেরেছেন।ভাল হয় যদি আগামিতে ওসব মাথায় রেখে দল নির্বাচনটা করা হয়।ঢাকা টেষ্টে অসহায় ভাবে হারের পর দল গঠনের ধরন আর দলের বিপদে ব্যাটসম্যানদের প্রয়োজন সময়ে সঠিক কাজটা না করতে পারার হতাশা-আক্ষেপটা থেকেই যায়।থাকাটাই স্বাভাবিক।এটা ঠিক আমাদের এখনও অনেক শেখার বাকি।শেখা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।তবে এটাও বলব এক টেষ্টে খারাপের মাঝেও কমেনি আমাদের তারকা ক্রিকেটারদের উপর আস্থা ভরসা।কমবেও না কখনও।সময়টা ভাল থাকলে ওরা যে অনেক কিছুই করে দেখাতে পারেন।যা দেখিয়েওছেন অনেকবার।খারাপ সময় যেতেই পারে আজ হয়ত আমাদের দিন ছিল না। কাল হয়ত আমাদের দিনই হবে। আমাদের জন্য হয়ত আরো বড় কিছু অপেক্ষা করছে, হয়ত বড় কোন বিজয় উৎসব। সেই প্রতিক্ষায় রইলাম আমরা ১৬ কোটি উৎসব মুখর বাঙালি।ছিলাম।আছি।থাকব।সময়টা যে টাইগারদের ভাল ভাবে জেগে উঠার।কোটি ভক্তের অকৃত্রিম ভালবাসায় ওরা জেগে উঠবেই।উঠতেই হবে লাল সবুজের পতাকাকে অনেক উচুতে তুলে ধরার জন্য।

One Response to “আজ হয়নিত কি-একদিন টেষ্টে জেগে উঠবেই টাইগাররা”

  1. Saleque Sufi

    May 10. 2015

    Well written deep thoughts. Bangladesh is not yet a strong enough test team to beat stronger opposition .Our domestic cricket format is weak and cricket is played on flat batting paradise . There is no incentive to pace bowlers .Consequently we do not possess a bowling attack which can take 20 wickets of a strong test team. Our batsmen do not have test temperament excepting a very few. Moreover selection process is very faulty and utterly biased. The upcoming series aginst three major test playing countries will be extremely challenging .
    We must prepare sporting wickets for even domestic cricket , expose our players to hard bouncy, grassy wickets . Give fair opportunities to players playing consistently well in domestic cricket .

    Reply to this comment

Leave a Reply