..মহিলা ক্রিকেট দল নিয়ে বেশ আশাবাদী লংকান কোচ গামাগী..

…অফিসের বিশেষ এক কাজের ফাঁকে গুলশানে রাত্র ৯টায় দাড়িয়ে ছিলাম আমাদের কোম্পানীর(মেট্রো গ্রুপ) নিজস্ব ভবন উদয় টাওয়ারের সামনে..হঠাৎ চোঁখ পড়ল এক সময়ের অতি পরিচিত এক মুখ..নাম ধরে হ্যালো বলতেই থমকে দাড়ালো..পরিচয় দিতেই বলে উঠলো কিরন ভাই..শেষ দেখা ছিলো দুদশক আগে..তবে চিনে নিলো ঠিক..তার স্মৃতি শক্তির প্রখরতা দেখে অবাকই হলাম..অনেকটা সময় নিয়ে কথা হলো তার সাথে..স্মৃতিচারনে মেতে উঠেছিলাম দুজনেই..স্মৃতিচারন করে অনেক কথাই বলছিলেন স্পষ্ট করেই..বলছিলাম ঢাকা ক্রিকেট লীগের এক সময়ের মোহামেডান-উয়ারী ও ব্রার্দাসের জনপ্রিয় ক্রিকেটার গামাগীর কথা..এমহুর্তে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের কোচ গামাগী..

…ঢাকা ক্রিকেট লীগে উয়ারীর হয়ে প্রথম খেলেছিলেন গামাগী..বোলিং আক্রমনের সূচনা করতেন ডান হাঁতি ফাষ্ট মিডিয়াম বোলার গামাগী..প্রথম আসরেই ক্ষুরধার বোলিং নৈপূন্যের ঝলক দেখিয়ে মন কাড়েন সবার..আর তাই নজড়ে পড়েন মোহামেডানের কর্তাদের..উয়ারীর হয়ে চমক দেখানোর পরেই যোগ দেন মোহামেডানে..মোহামেডানের দলের হয়ে খেলে গামাগী লীগ ও দামাল সামার ক্রিকেটের চ্যাম্পিয়নের স্বাধও নিয়েছেন..বেশ কটি ম্যাচে দলের জয়ের পেছনে মূখ্য ভুমিকাও রেখেছেন..এরপর শক্তিশালী ব্রার্দাসেও খেলেছেন..একটানা নয় বছর খেলা হয়েছে তার ঢাকা লীগে..শেষ বার খেলেন ব্রার্দাসের হয়ে ২০০০ মরসুমে..এরপরই কোচিং পেশায় নিজেকে জড়িয়ে নেন..মোহামেডান দলকেও একবার কোচিং করিয়েছেন..

..এশিয়ান গেমসে রৌপ্য জয়ী বাংলাদেশ মহিলা কিকেট দল..

একথা বলতেই হয় ঢাকা লীগে তাক লাগানো বোলিং নৈপূন্য প্রদর্শন করে গামাগী যেমন সবার দৃষ্টি কাড়েন তেমনি যেন সুনজড়ে পড়েন শ্রীলংকান দলের নির্বাচকদের..আর তাই ১৯৯৫ সালে ৩০ বছর বয়সে গিয়ে প্রথম বারের মত শ্রীলংকান জাতীয় দলের হয়ে ওয়ান ডে ম্যাচ খেলার সুযোগ লাভ করেন..তবে মাত্র ৪টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার মাঝেই তার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়..খেলেছেন নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২টি এবং ভারত ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১টি করে ম্যাচ..সারজায় পেপসি এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৭ ওভারে ১৭ রান দিয়ে ২ উইকেট লাভ করেছিলেন গামাগী..হাবিবুল বাশার সুমনকে ১৬ রানে এবং আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে ০ রানে ফেরান গামাগী..চার ম্যাচে তার সংগ্রহে ছিলো মাত্র ৩ উইকেট..

..১৯৯১ সালের লীগে মোহামেডানের গামাগীর বল মোকাবেলায় ফারুক(প্রধান নির্বাচক)..অপর প্রান্তে আকরাম..আম্পায়াড় মন্জুর মিল্কি..বাঁয়ে মোহামেডানের সতীর্থ খেলোয়াড় রফিকুল আলমের সাথে (সাবেক প্রধান নির্বাচক) গামাগী ..

গামাগী শ্রীলংকার ফাষ্ট ক্লাস ্িরককেটে ৭৩ ম্যাচে নিয়েছিলেন ১৮৪টি উইকেট..আর লিষ্ট-এ ম্যাচের ১৭ খেলায় নেন ১৯ উইকেট. খেলেছেন নানা সময় কোলষ্ট ক্রিকেট ক্লাব,গালে ক্রিকেট ক্লাব,কুরুনেগালা ইয়ুথ ক্লাব এবং মুরস স্পোটিং ক্লাবের হয়ে..খেলা ছেড়ে কোচিং পেশায় নেমে গামাগী লংকান প্রিমিয়ার ডিভিশন দল কুরুনেগালা ইয়ুথ ক্লাবের প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন কবছর..এরপর পাড়ি জমান অষ্ট্রেলিয়ায়..ওখানে ৩ বছর খেলোয়াড় কাম কোচের দায়িত্ব পালন করেন মের্লবোনের নোক্সফিল্ড ক্রিকেট ক্লাবের..অতঃপর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ মহিলা দলের কোচ হিসেবে যোগ দেন এইত কদিন আগে..

..১৯৯২ সালের মোহামেডানের দলের মাঝে গামাগী..

গামাগী আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে দীর্ঘ নয় বছর খেলার মাঝেই বাংলা ভাষাটা ভালই রপ্ত করে নিয়েছিলেন সে সময়টায়..যা ভুলে যাওয়া হয়নি তার..কথা যখন বলা হচ্ছিলো ইংরেজিতে তখন নিজেই বলে উঠলেন কিরন ভাই বাংলা ভাল বলতে পারি..ব্যাস শুরু হলো বাংলায় কথা বলা..বুঝতে বাকি থাকেনি ক্রিকেট বোর্ড কেন মহিলা দলের কোচ হিসেবে গামাগীকেই পছন্দ করেছিলেন..ভাষাগত বাড়তি সুবিধার কারনেই দলকে ভাল ভাবেই গড়ে তুলছেন গামাগী..আর মহিলা খেলোয়াড়দেরও যেন প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেছেন..গামাগীর প্রশিক্ষনে বাংলাদেশ মহিলা দলটি এশিয়ান গেমসে বলব দারুন নজড় কাড়া খেলাই উপহার দেয়..বলতে হয় দুভার্গ্যরে কারনেই যেন জেতা ম্যাচটা হেরে গিয়ে স্বর্ন পদকটা হাত ছাড়া হয়ে যায়..তবে গামাগী এদলটা নিয়ে বেশ আশাবাদী..বিশেষ করে দলের বোলিং আর ফিল্ডিংয়ের দারুন প্রশংসা করলেন গামাগী..আর দৃড় আশাবাদ ব্যাক্ত করেই বল্লেন ব্যাটিংএ ভাল ভাবে নজড় দিয়ে ইমপ্রুভ করতে পারলেই অনেকদুর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে..তাই যেন হয়..

..এশিয়ান গেমসের ফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অনেকটা নিশ্চিত জয় হাতছাড়া করারর হতাশা..

কোচ গামাগী আলাপের এক পর্যায়ে বলেই ফেল্লেন দীর্ঘদিন এদেশে খেলার কারনেই বাংলা ভাষাটা শেখা হয়েছে ভাল করে..মেশা হয়েছিলো  নানা মানুষের সাথে..খাপ খাইয়ে নেয়া হয়েছিলো পরিবেশের সাথে..বলব আলাদা একটা মায়া জম্নে যায় সেই সময় থেকেই..আবার যখন এলাম মনে হয়না দেশের বাইরে কোথায় আছি..বলতেই হয় বাংলাদেশ যেন আমার সেকেন্ড হোম হয়েই আছে..এদেশে খেলে আমি অনেক কিছুই পেয়েছি..তাই এক বছরের চুক্তির সময়টায় চেষ্টা করে যাব মহিলা দলটাকে একটা ভাল পর্যায়ে দাড় করিয়ে দিয়ে যেতে..ভাল করতে হলে বিশেষ প্রয়োজন বেশী করে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ..সেই সাথে লীগ ও নানা টুর্নামেন্টের আয়োজনের মাঝে খেলোয়াড়দের সক্রিয় করে রাখা..গামাগী বলেন ইচ্ছে আছে আর চেষ্টা করছি শ্রীলংকান মহিলা দলের সাথে নিয়মিত হোম এন্ড এওয়ে ম্যাচ আয়োজন করা নিয়ে..বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলটা নিয়ে কোচ গামাগীর আশাবাদ আর অগনিত ক্রিকেট ভক্তদের চাওয়া পূরন হোক এপ্রত্যাশাই থাকলো..

..১৯৯২ মরসুমের নাভানা ক্রিকেট লীগ চ্যাম্পিয়ন মোহামেডন দলে গামাগী..

 

One Response to “..মহিলা ক্রিকেট দল নিয়ে বেশ আশাবাদী লংকান কোচ গামাগী..”

  1. Saleque Sufi

    Oct 20. 2014

    Well done Kiron. Our Womens team and physical challenges team if given proper care ,attention and sponsorship will definitely pay back richer dividends . Women’s team has made tremendous strides . We from Australia are thinking how we can support Bangladesh Cricket .I will discuss with you during my ensuing Dhaka visit .Meantime keep encouraging Team Tigress.

    Reply to this comment

Leave a Reply