…গোল্লাকে সংবর্ধনা জানালো ”বাংলাদেশ ক্রিকেট সাপোর্টাস সোসাইটি”…

…আজ ৮ই ফেব্রুয়ারী জাতীয় যাদুঘর মিলনায়তনে ”বাংলাদেশ ক্রিকেট সাপোর্টাস সোসাইটি” আয়োজন করল এক মনোরম সংবর্ধনা অণুষ্টানের..এইত কদিন আগে ক্রিকেট খেলাটাকে গুড বাই জানান জাভেদ ওমর বেলীম..গোল্লা নামেই যিনি ছিলেন অধিক পরিচিত..সেই গোল্লাকে বিশেষ ভাবে সম্মান জানাতেই ”বাংলাদেশ ক্রিকেট সাপোর্টাস সোসাইটি” আয়োজন করেছিলো সংবর্ধনা অণুষ্টানটির..যা ছিলো একটি প্রশংসনীয় প্রয়াস নি:সন্দেহে..

..বাংলাদেশ বনাম শ্রীলন্কার স্মরনীয় ড্র টেষ্ট টিভিতে উপভোগ করা মিস করে যেভাবে শতাধিক ক্রিকেট ভক্ত রা এ অনুষ্টানে যোগ দেয় তা থেকে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান গোল্লার প্রতি তাদের আন্তরিক ভালোবাসাই ফুটে উঠে বেশী করে..অনুষ্টানের বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় কোচ জালাল আহমেদ,দৈনিক কালের কণ্ঠের ক্রীড়া সম্পাদক মোস্তফা মামুন ও বিশিষ্ট গায়ক আসিফ..এই তিন অতিথির রসালো স্মৃতিচারন অনুষ্টানটিকে প্রাণবন্ত করে তুলেছিলো….”বাংলাদেশ ক্রিকেট সাপোর্টাস সোসাইটি”-র  গোল্লার এই সুন্দর সংবর্ধনা অণুষ্টানটির আয়োজনের জন্য বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ জনাতেই হয় সংগঠনটির সভাপতি জুনায়দে পাইকার ও সম্পাদক জাবেদ আলীকে..

…”বাংলাদেশ ক্রিকেট সাপোর্টাস সোসাইটি”-র পক্ষ থেকে লটারীর মাঝে ভক্তদের নিজের অটোগ্রাফ সম্বলিত স্যুভেনীর ব্যাট তুলে দিচ্ছেন গোল্লা…

..আমাদের ক্রিকেটের এক অতন্দ্র প্রহরীর নাম এই গোল্লা..বলতে হয় মাঠের কুল ম্যান..ক্রীজের এক প্রান্ত নিজের মনে করে আগলে যেমন রাখতেন যতœ করে তেমনি রানও করে গেছেন..ঢাকার ক্রিকেটে এবং বাংলাদেশ দলে খেলে গেছেন দীর্ঘদিন নৈপূন্যের সাথেই..১৯৮৯ সালে প্রথম বারের মত জাতীয় অণুর্ধ ১৯ দলে ঠাই করে নিয়েছিলেন গোল্লা..’৯৪ সালে মালোয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক জুনিয়র ক্রিকেটের ফাইনালে গোল্লার চমকপ্রদ নৈপূন্যের সুবাদেই শ্রীলন্কাকে হারিয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নের স্বাধ নিয়ে ছিলো..দৃষ্টিনন্দন সর্বোচ ৭১ রান করে গোল্লা হয়েছিলেন ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়..এরপর ক্রমেই নিজেকে ধাপে ধাপে উপরে তুলে ধরে গোল্লা ঠাই করে নিয়েছিলেন মূল বাংলাদেশ দলে..এবং হয়ে উঠেন দলের নির্ভরতার প্রতিক..

”বাংলাদেশ ক্রিকেট সাপোর্টাস সোসাইটি”-র পক্ষ থেকে গোল্লাকে ক্রেষ্ট তুলে দিচ্ছেন কোচ জালাল আহমেদ

…গোল্লার স্মৃতিচারন করছেন বিশেষ অতিথি জাতীয় কোচ জালাল আহমেদ ও বিশিষ্ট গায়ক আসিফ…

..ক্রিকেটকে গুড বাই জানানোর আগে গোল্লা খেলেছেন বাংলাদেশ দলের হয়ে ৪০টি টেষ্ট ম্যাচ ও ৫৯টি ওয়ানডে ম্যাচ..টেষ্টে তার সংগ্রহে থাকে ১৭২০ রান..গড় ২২.০৫রান..ওদিকে ৫৯ওয়ান ডে ম্যাচে গোল্লা করেছিলেন ১৩১২ রান..যার গড় ২৩.৮৫ রান..টেষ্টে গোল্লার শতক একটি..যা করেছিলেন ২০০৩ সালে পাকিস্তানের পেশোয়ারে..১১৯ রানের ঝল মলে ইনিংস ছিলো সেটি..টেষ্টে অর্ধশত ছিলো ৮টি..গোল্লার টেষ্ট ক্রিকেটের সূচনাটাই ছিলো চমক জাগানো..২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বুলাওয়াতে প্রথম বারের মত টেষ্ট খেলতে নেমেই প্রথম ইনিংসে ৬২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ অপরাজিত ৮৫ রান..এখানে তুলে ধরার মত দিক ছিলো দ্বিতীয় ইনিংসে দল যেখানে ১৬৮ রানেই অলআউট সেখানে ব্যাটিংয়ের গোড়াপত্তন করে শেষ অবধি এক প্রান্ত আগলে ধরে গোল্লা অপরাজিত থেকে রের্কড করেন..

….গোল্লার নির্মান স্কুল দল….

..ওদিকে ওয়ানডেতে শতক না থাকলেও গোল্লার অর্ধশত ছিলো ১০টি..সর্বোচ রান অপরাজিত ৮৫ রান..২০০০ সালে ঢাকায় শ্রীলন্কার বিরুদ্বে সর্বোচ ৮৫ রান এসেছিলো গোল্লার ব্যাট থেকে..এছাড়া গোল্লার অপর ৯টি অর্ধশত ছিলো যথাক্রমে ইংল্যান্ডের বিরুদ্বে অপ: ৬৩,৫৯,৮১রান,জিম্বাবুয়ের বিরুদ্বে ৬৯,৫৪ রান,হংকংয়ের বিরুদ্বে ৬৮ রান,পাকিস্তানের বিরুদ্বে ৬২ রান,কেনিয়ার বিরুদ্বে অপ:৬৪ রান,ভারতের বিরুদ্বে ৮০ রান..

….আসিসিসি ট্রফি জয়ী দলের সংবর্ধনা অণুষ্টানে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে গোল্লা….

..জাতীয় দলের হয়ে দীর্ঘদিন নৈপূন্যের সাথে খেলে গেলেও দু:খজনক হলেও সত্য জাতীয় দলের হয়ে আনুষ্টানিক ভাবে সম্মানের সাথে বিদায়ের সুযোগটি পাননি গোল্লা..ব্যাপারটা কতটা যে পীড়াদায়ক তা না বল্লেই নয়..এইত সেদিন ক্রীড়া সাংবাদিক রা এক প্রীতি ক্রিকেটে অংশ নিয়েছিলো জাতীয় দলের প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে..যা কিনা করা হয়েছিলো গোল্লার সম্মানেই..আর সেদিনই খেলার পর গোল্লা চীরতর ভাবেই তার  অনেক ভালোবাসার প্রিয় ব্যাট-প্যাড তুলে রাখেন..খেলা শেষে দীর্ঘদিনের  সুখকর  খেলোয়াড়ী  জীবনের  মধুর স্মৃতি গুলো মনে করে আবেগের এক পর্যায়ে গোল্লা তার  চোঁখের জ্বল আর লুকাতে পারেননি..খেলা হয়ত ছেড়েছেন গোল্লা তবে ক্রিকেট গোল্লাকে ছাড়েনি বলতে হয়..ক্রীকেট বিহীন গোল্লা ভাবাই যায়না..আর তাই নিজেকে প্রশিক্ষক হিসেবে নুতন করে পরিচিত করতে যাচ্ছেন..আমাদের ক্রীকেটে গোল্লার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো হলে ক্রিকেট যে উপকৃত হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা..বোধকরি ব্যাপারটা বোর্ড কর্তাদের মাথায় থাকবে..

….’৯৪ সালে মালোয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক জুনিয়র ক্রিকেটের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দল….

..আমাদের ক্রিকেটের আজকের এই পর্য়ায়ে আসার পেছনে যার কথা আলাদা ভাবেই তুলে ধরতে হয় তিনি হলেন প্রাক্তন ক্রিকেট র্বোড সভাপতি নির্মান ইন্টারন্যাশনালের স্বত্তাধিকারী কে.জেড.ইসলাম..তিনিই প্রথম তার পৃষ্টপোষকতায় আশি দশকের গোড়াতে ১৯৮২ মরসুমে আয়োজন করেছিলেন নির্মান স্কুল ক্রীকেট..বলতে হয় গোটা দেশেই ছড়িয়ে দিয়েছিলেন স্কুল ক্রিকেটের প্রচলন..যা দারুন ভাবেই সাড়া জাগিয়েছিলো..শুধু তাই নয় বাছাইকৃত প্রতিভাবান খেলোয়াড় নিয়ে কে.জেড.ইসলাম একটি দল ও গড়েছিলেন জুনিয়র লীগ আসরে..সাফল্যের ধারাবাহিকতায় সেই নির্মান স্কুল দলটি প্রথম বিভাগেও জায়গা করে নিয়েছিলো সবার নজড় কাড়ার মাঝে..সেই নির্মান স্কুল ক্রীকেট দলের  এবং স্কুল ক্রিকেট খেলে পরবর্তীতে অনেকেই আমাদের জাতীয় দলেও ঠাই করে নিয়েছিলেন..

………..বাংলাদেশ দল………….

..স্কুল ক্রিকেটেরই সৃষ্টি জাতীয় দলের  এক সময়ের তারকা ব্যাটসম্যান ও দলনায়ক বুলবুল..আর কে.জেড.ইসলামের গড়া নির্মান স্কুল দলটির ৩ জনের নাম আলাদা ভাবেই তুলে ধরতে হয়..যারা আমাদের ক্রিকেটের অতি চেনা ও জনপ্রিয় মুখ..এর একজন হলেন যাকে নিয়ে লেখা সেই গোল্লা..আর অপরজন হলেন অন্যতম দেশ সেরা ব্যাটসম্যান ও জাতীয় দলের প্রাক্তন দলনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন..এবং জাতীয় দলের এক সময়ের বাঁ হাতি পেসার আনিস(এ মহুর্তের দেশ আম্পায়াড়দের একজন)..গেল্লাকে খূব কাছ থেকেই দেখেছি সেই নির্মান স্কুল প্রচলনের শুরু থেকেই.. খেলার প্রতি দরদ,আন্তরিকতা আর চেষ্টা-পরিশ্রম-ধর্য্য থাকলে যে সাফল্য লাভ সম্ভব তারই উজ্জল উদাহরন গোল্লার সাফল্যের কাহিনী..

…গোল্লার সংবর্ধনা অণুষ্টানে বিশেষ অতিথি দৈনিক কালের কন্ঠের ক্রীড়া সম্পাদক মোস্তফা মামুন গোল্লাকে নিজের লেখা বই উপহার দিচ্ছেন…

..”বাংলাদেশ ক্রিকেট সাপোর্টাস সোসাইটি”-র সভাপতি জুনায়দে পাইকার ও সম্পাদক জাবেদ আলীর মাঝে গোল্লা..


No comments.

Leave a Reply